নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তি কমিশনের মামলা চলাকালে মৃত্যুবরণ করলে তার অবৈধ সম্পদের কী হবে- এমন প্রশ্ন রেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিটের জন্য একটি সার্বজনীন নীতিমালা প্রয়োজন। সোমবার দুদক অডিটোরিয়ামে এক যৌথ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এশিয়ান ডেভালপমেন্ট ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ সংক্রান্ত কারিগরি প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনোহ্যাভেন-জেভি’র সঙ্গে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গৃহীত এই প্রকল্প তখনই স্বার্থক হবে, যদি কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা বৃদ্ধিতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
কমিশনের সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিটের কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক। কমিশনের কর্তব্য হবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রেখে আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এডিবির অর্থায়নে যে কারিগরি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে এটা কমিশনের কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা এমন পদ্ধতির সংযোজন করবেন যাতে প্রতিষ্ঠানটি পদ্ধতি কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। কমিশনের প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত কিংবা অন্যান্য আনুষঙ্গিক সকল কার্যক্রম নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করতে হলে অবশ্যই মনিটরিংয়ের স্বার্থে একটি আইটি বেইজড সিস্টেম চালু করা প্রয়োজন। বর্তমান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে প্রতিটি নথি মনিটরিং করা প্রায় অসম্ভব।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন চায় দেশের এবং বিদেশের জ্ঞানের সংমিশ্রণে দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত, প্রসিকিউশন, দুর্নীতি প্রতিরোধসহ প্রশাসনিক ক্ষেত্রের সকল কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য একটি সর্বোৎকৃষ্ট প্রযুক্তি নির্ভর তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক পদ্ধতির সংযোজন।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর করা এবং কমিশনের সকল অনুসন্ধান ও তদন্ত নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে সম্পন্ন করা।
সাত কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই-বাছাই, অনুসন্ধান, তদন্ত, প্রতিরোধ ও মামলা পরিচালনার কাজে নিবিড়ভাবে তদারকির জন্য ওয়েবভিত্তিক সফটওয়্যারের সংযোজন। ২০২০ সালে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টেকনোহ্যাভেনের কনসাল্টেন্ট ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মো. আবুল হাসান মনযুর মান্নান, দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মো. মঈদুল ইসলাম, মহাপরিচালক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. জাফর ইকবাল প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর