১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:৫২

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর। মাটির ঘরের কদর কমিয়ে দিয়েছে সাম্প্রতিক বন্যা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। অথচ দিনাজপুর অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই দেখা যেত নজর কাড়া মাটির একতলা কিংবা দোতলা বাড়ি।  শুধু মাটির বাড়িই নয়, ছিল ধান-চাল রাখার জন্য মাটির তৈরী গোলা ঘর ও কুঠি। তবে দিন দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে এসব আজ হারাতে বসেছে।

এই মাটির ঘর ঠান্ডা থাকায় এক সময় এটাকে গরীবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরও বলা হতো। এ ঘর গরমের সময় আরামদায়ক। তাই অনেক গ্রামেই বিত্তশালীদেরও দোতলা মাটির ঘর ছিল। এখনও এ অঞ্চলের অনেক গ্রামে রয়েছে। তবে দিনাজপুর জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় এসব মাটির ঘরের বেশিরভাগই হয় ভেঙ্গে গেছে, না হয় ফেটে গেছে। এ নিয়ে চিন্তিত অনেকে। কিন্তু দরিদ্র পরিবারগুলোর ভরসা ওই মাটির ঘরই। মাটির সহজলভ্যতা, এর প্রয়োজনীয় উপকরণ আর শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় আগের দিনে মানুষ মাটির ঘর বানাতে বেশী আগ্রহী ছিল। মাটির ঘর যাদের আছে তারা প্রতিবছরই মাটির প্রলেপ দেয়। অনেকে আবার চুনকামসহ বিভিন্ন রংও করেন।

বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউপি’র হরিপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম জানায়, সাধারণত এটেল বা আঠালো মাটি দিয়ে পানির সঙ্গে মিশিয়ে কাদায় পরিণত করা হয়। এরপর ২০/৩০ইঞ্চি চওড়া দেয়াল তৈরী করা হয়। প্রতিটি ঘর তৈরী করতেও মাসখানেক সময় লেগে যায়। কারণ একেবারে দেয়াল তোলা যায় না। কিছু দেয়াল তোলার পর শুকাতে হয়। ১০/১৫ ফুট উচু দেয়ালে কাঠ বা বাশের সিলিং তৈরী করে তার উপর খড় বা টিনের ছাউনি দেয়া হয়। তার দ্বিতল মাটির বাড়ি এখনও রয়েছে। এ গ্রামে অনেকের এই মাটির ঘর আছে।

দিনাজপুর সদরের আউলিয়াপুর গ্রামের মোসাদ্দেক হোসেন জানায়, অনেকে বাশ, মাটি, টিন সংগ্রহ করে নিজেরাই মাটির ঘর তৈরী করেন। এক্ষেত্রে সময় বেশী লাগে। তবে খরচ কম পড়ে। শ্রমিক না নিলে কমপক্ষে ১২/১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তাই এ অঞ্চলের গ্রামগুলোতে এখনও মাটির বাড়ি-ঘর রয়েছে।  এই মাটির ঘর ভুমিকম্প বা বন্যা না হলে এর স্থায়িত্ব শতবছরও হতে পারে বলে তারা জানায়।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৮ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ