নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শুক্রবার দুপুরে নিয়োগ সংক্রান্ত আদেশে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
বঙ্গভবনের মুখপাত্র মো. জয়নাল আবেদীন জানান, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের আদেশে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি। আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গভবনে নতুন প্রধান বিচারপতিকে শপথ পড়াবেন তিনি। এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নাম প্রস্তাব করে আসেন।
এ সময় তার সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর ছুটিতে যান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। এরপর থেকে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগপত্র পাঠান। ১৪ নভেম্বর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে রাষ্ট্রপতির দফতর তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এরপর এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।’
সংবিধানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা না থাকলেও রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রথমে আপিল বিভাগের যে বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন, তার ব্যাপারে সম্মতি দিয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়কে জানান। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে ওই বিচারপতির ব্যাপারে ফাইল প্রস্তুত করে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠান। প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পর বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে যায়। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর প্রধান বিচারপতি নিয়োগের গেজেট জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। শুরু থেকেই আপিল বিভাগের তিনজন বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হওয়ার আলোচনায় থাকলেও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে বেছে নিল সরকার।
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি (আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে) হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন। ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ওই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে সঙ্গে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ