২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১:০৫

প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই নিয়োগ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হবে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে ফের একই পদে দলের পক্ষ থেকে মনোনয়নের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন জানান, প্রধানমন্ত্রী ফুলের তোড়া দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রপতিও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এই বৈঠকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নাম বলে এসেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর ছুটিতে যান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। এরপর থেকে বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগপত্র পাঠান। ১৪ নভেম্বর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে রাষ্ট্রপতির দফতর তা পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে। এরপর এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি শোনা যায়নি।

সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শ করিয়া রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিচারককে নিয়োগদান করিবেন।’

সংবিধানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা না থাকলেও রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রথমে আপিল বিভাগের যে বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন, তার ব্যাপারে সম্মতি দিয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়কে জানান। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে ওই বিচারপতির ব্যাপারে ফাইল প্রস্তুত করে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠান। প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পর বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে যায়। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর প্রধান বিচারপতি নিয়োগের গেজেট জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।

শুরু থেকেই আপিল বিভাগের তিনজন বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হওয়ার আলোচনায় থাকলেও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে বেছে নিয়েছে সরকার। সবকিছু ‍ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহে গেজেট হতে পারে।

বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০০১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি (আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে) হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন। ২০০৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ওই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে সঙ্গে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

আলোচনায় থাকা বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা ১৯৮৮-৮৯ এবং ১৯৮৯-৯০ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সম্পাদক ছিলেন। বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০০১ সালের ২৪ অক্টোবর তিনি একই বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

এছাড়া আলোচনায় থাকা আরেক বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এবং ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৮ ১২:১১ অপরাহ্ণ