নিজস্ব প্রতিবেদক:
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্কের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি। শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার কারণে সরকারিপক্ষের আইনজীবী সময়ের আবেদন করলে বৃহস্পতিবার পুরানো ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের বিচারক ওইদিন ধার্য করেন। সরকারিপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চলাচলের সুবিধার জন্য সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে এই মামলার হাজিরা দিতে বেলা ১১ টা ২৪ মিনিটে তিনি আদালতে পৌঁছান। এরপর বেলা সাড়ে ১১ টায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। মামলার আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। মঙ্গলবার সরকারিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়। ওইদিন ও গতকাল বুধবার আমিনুল ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এর আগে আদালতে হাজিরা দিতে সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’থেকে আদালতের উদ্দেশে খালেদা জিয়া রওনা হন। গত ২৫ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্ততর্কের জন্য দিন ধার্য করেন।
ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। খালেদা জিয়ার হাজিরা ঘিরে আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া আদালতের প্রধান ফটকে স্ক্যানার বসিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন— খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন— মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ