আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ঐতিহাসিকভাবে আফগান সরকার দেশটির যেসব জেলা নিয়ন্ত্রণ করতো কিংবা সরকারের প্রভাবে ছিল, ২০০৯ সালের পর থেকে তার মধ্যে অনেক এলাকার ওপর সরকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। অন্যদিকে, বিদ্রোহীরা এদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তান পুনর্গঠন বিষয়ক বিশেষ মহাপরিদর্শক (এসআইজিএআর) জন এফ সপকো মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন তাতে এমনটাই বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, ‘এর চেয়েও বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো- খবরটি জনগণের কাছে গোপন করা হচ্ছে।’ পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদনের পর ২০০৮ সালে এসআইজিএআর প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং তারপর থেকে এটি আফগানিস্তানে মার্কিন সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন দিয়ে আসছে। সর্বশেষ প্রতিবেদনের ব্যাপারে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে এসআইজিএআর-কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, এ খবর যাতে প্রকাশ করা না হয়।
সপকো লিখেছেন, ‘২০০৯ সাল থেকে এই প্রথম প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে এমন উদ্বেগজনক নির্দেশনা দেওয়া হলো। সেইসঙ্গে আফগান প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনীর পারফরম্যান্সের বিষয় আলাদা করার কথা বলা হয়েছে।’ প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, সম্প্রতি আফগানিস্তানে ফ্যাসিলিটি বাড়ানো হয়েছে। বিমান হামলাসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদিও বাড়ানো হয়েছে। সেইসঙ্গে পরিবর্তন করা হয়েছে কৌশল। কিন্তু তারপরও আফগান জনগণের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়েনি। গত বছরের নভেম্বর মাসে আফগানিস্তানে মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন নিকোলসন বলেন, ৬৪ শতাংশ আফগান জনগণ সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবাধীনে রয়েছে। এ ছাড়া ১২ শতাংশ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাবে রয়েছে। আর বাকি ২৪ শতাংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।
প্রসঙ্গত, আফগান সরকারের লক্ষ্য হলো আগামী দুই বছরের মধ্যে ৮০ শতাংশ জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তার করা। এদিকে, মঙ্গলবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে- আফগানিস্তানের অন্তত ৭০ শতাংশ জেলায় তালেবানরা সক্রিয় এবং ৪ শতাংশ জেলা তাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া ৬৬ শতাংশ জেলায় তাদের সরাসরি উপস্থিতি রয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি