নিজস্ব প্রতিবেদক:
টানা ১৯ দিন ধরে অবস্থান এবং আমরণ অনশনের পরও এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষা জাতীয়করণের দাবির প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না সরকার। ফলে ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনের পাশাপাশি আজ সোমবার থেকে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লাগাতার ধর্মঘটে যাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি চলবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সংগঠন বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের উপদেষ্টা আবুল বাশার হাওলাদার গতকাল রোববার বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসায় তাঁরা অনশনের পাশাপাশি লাগাতার ধর্মঘটে যাচ্ছেন। তবে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে আলোচনাও চলছে। দাবি আদায়ে ১০ জানুয়ারি থেকে অবস্থান এবং ১৫ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন করছেন এমপিওভুক্ত এসব শিক্ষক-কর্মচারী। গতকাল আমরণ অনশন ১৪ দিনে গড়াল। অনশনের কারণে এই কয় দিনে অসুস্থ হওয়া শিক্ষকের সংখ্যা দেড় শতাধিক হয়েছে।
শিক্ষা জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিন পূর্ণদিবস ক্লাস বর্জন কর্মসূচি শেষে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মহাসমাবেশসহ নতুন কিছু কর্মসূচি দিয়েছে শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটি। ৯টি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের এই যৌথ মোর্চার মহাসমাবেশটি হবে ১৪ মার্চ ঢাকায়। এর আগে মতবিনিময়, বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশসহ আরও কিছু কর্মসূচি পালন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কমিটির সমন্বয়কারী আসাদুল হক বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ায় পরীক্ষার সময় তাঁরা কর্মসূচি রাখেননি। এ জন্য পরীক্ষার পর কর্মসূচি দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্য শিক্ষকনেতারা বলেন, কর্মবিরতির পরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাঁদের দাবির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি আলোচনা পর্যন্ত করেনি। তাই তাঁরা বাধ্য হয়ে নতুন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন শিক্ষকনেতা এম এ আউয়াল সিদ্দিকী, মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁদের বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের দাবিতে গতকাল অষ্টম দিনের মতো অনশন ও দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন পালন করেছেন। কিন্তু সরকার থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছেন না তাঁরা। শিক্ষকনেতা ছালেহ উদ্দিন বলেন, তাঁদের একটি প্রতিনিধিদল সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছে। ‘শর্ত পূরণ করলেও’ জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৪ হাজার ১৫৯টি। এগুলোতে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক রয়েছেন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি