বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক :
লন্ডনভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এফেক্টিভা। প্রতিষ্ঠানটি মূলত মানুষের মুখের বা শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়াগুলোর ওপর ভিত্তি করে মানুষের আবেগকে শণাক্ত করার জন্য কম্পিউটারভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপস বা সফটওয়্যার তৈরি করে থাকে।
অতি সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি আবেগ শণাক্তকারী ইঞ্জিন তৈরি করেছে। তারা আশা করছে নতুন এই ইঞ্জিন গাড়িকে আরো অনেক মানবিক করে তুলবে। প্রতিষ্ঠানটি গত আট বছর ধরে আবেগ শণাক্তকারী ইঞ্জিন নির্মাণ করার জন্য কাজ করে আসছিল। বর্তমানে ইঞ্জিনটির বাজার গবেষণা এবং গাড়িতে ব্যবহার করার জন্য আরো উন্নতকরণের কাজ চলছে।
আবেগ-সচেতন গাড়িগুলো অমনোযোগী ড্রাইভারকে মনোযোগী করতে, রেগে থাকা চালককে রাগ প্রশমিত করতে এবং স্বয়ংক্রিয় গাড়ির জন্য সতর্কতাগুলো ব্যবহার করতে সাহায্য করবে।
ক্রমবর্ধমান অত্যাধুনিক চালক সহায়তা প্রযুক্তিগুলো ড্রাইভিং সম্পর্কিত অনেক কাজই গাড়িগুলোর ওপরই ন্যস্ত করছে। কিন্তু এই সব প্রযুক্তি মানুষের পছন্দ অনুযায়ী চালিত নাও হতে পারে। এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত গাড়ির টেকনোলজিস্টদের মধ্যে একটি বড় বিতর্ক হল, শত শত মাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালনার পর কিভাবে গাড়ির ড্রাইভার এর নিয়ন্ত্রণ নেবে।
এফেক্টিভার প্রোডাক্ট ম্যানেজার আব্দেল রহমান মাহমুদ বিশ্বাস করেন যে, তাদের এই নতুন ইঞ্জিনচালিত গাড়িগুলোর যাত্রীদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান থাকার ফলে এই সমস্যাগুলো হ্রাস পাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি স্বয়ংক্রিয় চালিত গাড়ি জানতে পারতো যে এখন আপনি ভয়ঙ্কর রেগে আছেন তাহলে কিন্তু এটি তার ড্রাইভিং শৈলীটি কম আক্রমণাত্মক রুপে রুপান্তর করতে পারতো। নতুন এই প্রযুক্তির ফলে যদি কোনো গাড়ি বুঝতে পারে যে তার যাত্রী এখন ভয়ে বা বিভ্রান্তিতে আছেন তবে এটি তার রুট এবং চূড়ান্ত গন্তব্যে প্রদর্শন করতে পারবে যেন যাত্রী নিশ্চিত হতে পারে এটি কোথায় যাচ্ছে।
এফেক্টিভার এই সিস্টেমটিতে গাড়ির চালকের মুখের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে যা মুখের ৩৩টি ভঙ্গিমা চিহ্নিত করতে পারে। এরপর তা এফেক্টিভার ৫ মিলিয়নেরও বেশি মুখের সংশ্লেষণের গভীর উপলব্ধির ওপর ভিত্তি করে সে তথ্য কম্পিউটারের স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে চালকের মনের অবস্থা জানা যাবে। কম্পিউটার সাতটি আবেগ যেমন: আনন্দ, বিস্ময় ও ভয় চিহ্নিত করতে পারে।
মাহমুদ বলেন, এফেক্টিভা বর্তমানে বেশ কয়েকটি জার্মান ও জাপানিজ অটোমোকার্স কোম্পানির সঙ্গে এই প্রযুক্তিটি নিয়ে কাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী বছর থেকে এই প্রযুক্তিটির ব্যবহার শুরু হতে পারে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ