আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ দুই পক্ষ। নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানে অনড় রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, দুই দলই। প্রকাশ্যে বোঝাপড়া তো দূরের কথা, ‘শাট ডাউন’-এর প্রথম দিনে একে অপরকে দুষেই গেলেন তারা। গতকাল রবিবার দিনভর ‘অভিমানী’ টুইট করে গেলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—‘বর্ষপূর্তিতে ডেমোক্র্যাটরা আমায় ভালোই উপহার দিলেন।’
বাজেটে অর্থ বরাদ্দ-সংক্রান্ত একটি বিল মার্কিন সিনেটে আটকে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি হয়। শুক্রবার গভীর রাতে আইনসভার উচ্চকক্ষ অর্থাৎ সেনেটে টেম্পোরারি স্পেন্ডিং বিল পেশ করেন ট্রাম্প। কিন্তু ভোটাভুটিতে প্রয়োজনীয় ৬০টি সমর্থন ছিনিয়ে নিতে পারেননি তিনি। তাতেই রাতারাতি তালা পড়েছে মার্কিন রাজকোষে। জাতীয় সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিষেবা ছাড়া সব দপ্তরের কাজ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা জানাচ্ছেন, এর আসল প্রভাব টের পাওয়া যাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিনেই। সরকারি কর্মীরা অফিস যেতে পারবেন না। বিনা বেতনে বাড়িতে বসে থাকতে হবে। জরুরি পরিষেবা বহাল থাকলেও বাহিনীর একাংশ বেতন পাবেন না, যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হচ্ছে।
এরই মধ্যে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাকনেল রবিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে ভোটের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘আশ্বাস দিচ্ছি, পথ মিলবে।’ তবে আজ আর সেই ভোটগ্রহণ হয়নি।ডেমোক্র্যাট দলের সিনেট সদস্য চুক সিউমারের বিরোধিতায় তা বাতিল হয়ে যায়। সিনেটর চুক বলেন, ‘আমরা এখনো উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো সমাধানে আসতে পারি নাই।’ সোমবার দুপুর পর্যন্ত ভোট স্থগিতের অর্থ হলো আগামী সপ্তাহে মার্কিন ফেডারেল সরকারের অনেক কাজই বন্ধ থাকবে।
গত শনিবার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে পার্টি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু উৎসব করার বদলে তিনি টুইটারেই ব্যস্ত ছিলেন। লিখেছেন, ‘বেআইনি অভিবাসীদের নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের খুব মাথাব্যথা। অথচ সেনাবাহিনী বা দেশের নিরাপত্তা নিয়ে ওদের চিন্তা নেই।’
এই নিয়ে ১৯৯০ সাল থেকে চার বার ‘শাট ডাউন’ হলো যুক্তরাষ্ট্র। শেষ বার হয়েছিল ২০১৩ সালে। ৮ লাখেরও বেশি সরকারি কর্মীকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বসিয়ে দেয়া হয়েছিল সেই বছর। ‘পরিস্থিতি ভয়ের মতোই। কিন্তু ধৈর্য ধরা ছাড়া উপায় কী’- বললেন এক সরকারি কর্মী নোয়েল জল।
বছর পঞ্চাশের নোয়েল ২০১৩ সালে বারাক ওবামার জমানাতেও ‘শাট ডাউন’ কী, দেখে এসেছেন। তবে বললেন, ‘এ বার পরিস্থিতি আরও খারাপ।’ একই সুর শোনা গিয়েছে সেনেটর চাক শুমারের গলায়।বলেছেন, ‘ট্রাম্প কখন কী করবেন, বোঝা মুশকিল। তাই ওকে বুঝিয়ে রাজি করা এক প্রকার অসম্ভব।’ সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ