নিজস্ব প্রতিবেদক:
দ্বিতীয় বর্ষের ফলাফল প্রকাশ ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা নেওয়াসহ কয়েকটি দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউ মার্কেট মোড়ে বিক্ষোভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পরীক্ষার সময়সূচি আর ফল প্রকাশের দাবিতে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় আন্দোলনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, ‘পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে’ এই কলেজগুলোকে অধিভুক্ত করা হয়েছিল।
ঢাকার এই সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর উল্টো আন্দোলনের মধ্যে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই স্বীকারোক্তি মেলে।
গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আসার পর তিন দফা আন্দোলনে নামতে হয় অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের। গত ২০ জুলাই ফল প্রকাশ ও পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে প্রথম আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।
এই আন্দোলনে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে দৃষ্টিশক্তি হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান। এই ঘটনায় এক হাজার ২০০ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলাও করে পুলিশ।
দ্বিতীয় দফায় গত অক্টোবরে কয়েকশ শিক্ষার্থী চতুর্থ বর্ষের ফল প্রকাশের দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করে। ওই সময় যথাসময়ে ফল প্রকাশে প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। নভেম্বরের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশিত হয়।
এর দুই মাসের পর গত বৃহস্পতিবার ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ফল প্রকাশ ও তৃতীয় বর্ষের ক্লাস শুরুর দাবিতে আবারও নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। আগামী এক মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে।
তার মধ্যে আবার গত সপ্তাহে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে একদল শিক্ষার্থী; তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করে।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য আসে; তাতে অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেসব বিভ্রান্তি বা অস্পষ্টতা রয়েছে, সেসব নিরসনে সাতটি বিষয় উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয় , “পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে হঠাৎ করে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রহণের ফলে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় গত বছর এই কলেজগুলোর অধিভুক্তির সময় উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক; তিনি যাওয়ার পর এখন উপাচার্যের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক আকতারুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “স্বতন্ত্র লোকবল ও ব্যবস্থাপনা দ্বারা অধিভুক্ত বা উপাদানকল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বিধায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও সামগ্রিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না।”
অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের সব কার্যক্রম নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পরিচালিত হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরিচয়পত্র দেওয়া হবে না; তারা পূর্বের ন্যায় নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচয়পত্র গ্রহণ করবে।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, পাঠাগার প্রভৃতির কোনোটিই ব্যবহার করার সুযোগ তাদের নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থীদের জন্যই উন্মুক্ত।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ