আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আবারও বাজেট নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সরকারের নতুন বাজেট নিয়ে দেশটির সিনেটররা একমত হতে না পারায় শাটডাউন অর্থাৎ অচলাবস্থার মুখে পড়েছে দেশটি। ফলে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের একাংশের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে গেল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের এক বছর পূর্তির মাঝেই সরকারের বাজেট বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল সম্পর্কে সিনেটরদের মধ্যে দ্বিমত থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাজেট বৃদ্ধির বিষয়ে সিনেটে প্রস্তাবিত বিলটি পাসের বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রস্তাবিত বিলের বিষয়ে আলাপ আলোচনার পরও রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটররা একমত হতে ব্যর্থ হন।
ফলে প্রস্তাবিত বিলটি পাসের জন্য সিনেট নেতা মিচ ম্যাককনেল ভোটাভুটির আয়োজন করেন। সেখানে বিলটি পাসের জন্য ৬০ ভোটের প্রয়োজন হলেও পক্ষে ভোট পড়ে ৪৯টি। আর বিপক্ষে পড়ে ৫০টি ভোট। বিলটির বিপক্ষে সিনেটের খোদ ৫ রিপাবলিকান সদস্যও ভোট প্রদান করেন।তবে নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ’এ বৃহস্পতিবার রাতে বিলটি ২৩০-১৯৭ ভোটে উচ্চকক্ষে প্রেরণের জন্য পাস করা হয়েছিল।
এমন অবস্থায় আগামী আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের অনেক সরকারি অফিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর আগে সর্বশেষ ২০১৩ সালে টানা ১৬ দিনের জন্য দেশটিতে প্রশাসনিক দেউলিয়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল।
মার্কিন সিনেটে আলোচনা চলাকালীন এক টুইটার বার্তায় বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এর প্রভাব মার্কিন নিরাপত্তায় পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এদিকে, মার্কিন প্রশাসনের অচলাবস্থা দেখা দেয়ায় দেশটির জাতীয় উদ্যান, জাদুঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি দেশটির পাসপোর্ট ও ভিসা প্রক্রিয়াও বন্ধ থাকবে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
তাদের মতে, এই অচলাবস্থার প্রভাব দেশটির প্রায় প্রায় লাখ সরকারি কর্মচারীর উপর পড়বে। শ্রমিকদের সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হবে। অথবা তাদের কাজ ছাড়াই বেতন দেওয়া হবে। তাতে উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের অচলাবস্থার প্রভাব দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ সুরক্ষায় প্রভাব ফেলবে না। সামরিক এ আইন-শৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকই চালু থাকবে। গবাদি পশুর স্বাস্থ্য সেবা ও দরিদ্র পরিবারের জন্য বিশেষ সুবিধাও চালু থাকবে।
সবশেষ ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাস্থ্য নীতিতে অর্থায়ন প্রসঙ্গে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়ায় ১৬ দিনের শাট ডাউন’এর কবলে পড়ে দেশটি। এর আগে ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ২৭ দিন শাট ডাউন’এর ঘটনা ঘটেছিল।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ