২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:১০

ঘণ্টায় মাদকের ১১টি করে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাদক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ, স্বীকারোক্তি এসেছে খোদ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এ শহীদলি হকের কাছ থেকে। মাদককে নতুন জঙ্গি উল্লেখ করে বড় ধরনের অভিযান চাইছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদে একজন সদস্য মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ থাকলে তাকেও হত্যা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সরকার ও পুলিশ প্রধানের এই বক্তব্যই বলে দেয় মাদকের বিস্তার কি পর্যায়ে গেছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে এখন ফেসবুকে বিভিন্ন পেজেও মাদকের অর্ডার নিয়ে তা সরবরাহ করা হয়। মাদকের ব্যবহার কতটুকু বেড়েছে তার একটি নমুনা দেখা যায় মামলাতেই। ২০১৭ সালে দেশে প্রতি ঘণ্টায় মাদকের মামলা হয়েছে ১১টি করে।

পুলিশ নিজেই স্বীকার করে যে মামলার পরিসংখ্যান দিয়ে মাদকের বিস্তারের ভয়াবহতা বোঝা যাবে না। কারণ মাদক বিক্রি, পরিবহন, সেবনের ঘটনায় মামলা হয় কমই।

পুলিশের মামলার পরিসংখ্যান এও বলছে যে মাদক সংশ্লিষ্ট ঘটনা প্রতি বছর বেড়েই চলেছে। পুলিশ সদর দপ্তরেরর হিসাব অনুযায়ী ২০১৩ সালে মাদক আইনে মামলা হয়েছে ৩৫ হাজার ৮৩২টি। পরের বছর মামলা প্রায় সাত হাজার বেড়ে হয় ৪২ হাজার ৫০১টি।

২০১৫ সালে মাদক আইনে মামলা আরও বাড়ে পাঁচ হাজারের মতো। ওই বছর মামলা হয় ৪৭ হাজার ৬৭৯টি। পরের বছর মামলা বাড়ে ১৫ হাজারের বেশি। ওই বছর মামলা হয় ৬২ হাজার ২৬৮টি। সদ্য বিদায়ী বছরে আগের বছরের তুলনায় মামলা বেড়েছে ২৫ হাজারেরও বেশি। এই বছর মামলা হয় ৯৮ হাজার ৯৮৪টি। অর্থাৎ প্রতি দিন মামলা হয়েছে ২৭১টি। আর ঘণ্টায় ভাগ করলে এটা দাঁড়ায় ১১.২৯টি।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য খাতের প্রধান ইকবাল মাসুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে যে পরিমাণ মাদক ধরা পড়ে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ মাদক বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে।’ মাদকাসক্তরা কেবল নিজের বা পরিবারের ক্ষতি করছে না। তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বা জননিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সম্প্রতি ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ জানতে পেরেছে তাদের মধ্যে ৯৯ শতাংশই মাদকাসক্ত। আর মাদকের টাকা যোগাড় করতেই ছিনতাই করে তারা।

এ ছাড়া মাদকের টাকা যোগাড় করতে বাবা মায়ের ওপর আক্রমণ, পুত্র, কন্যা-স্ত্রীকে নির্যাতন , বাড়ির জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয়ার মতো অভিযোগ আসে অহরহ। তবে সামাজিক লজ্জার ভয়ে বেশিরভাগ ঘটনাই প্রকাশ পায় না। আবার খুনোখুনিও বিরল নয়। প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে কিশোরদের মধ্যেও মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধের উচ্চ হার ভাবিয়ে তুলছে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকেও।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জানুয়ারি ২০, ২০১৮ ১২:১৮ অপরাহ্ণ