ধর্ম ডেস্ক :
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আজ শুক্রবার বাদ ফজর থেকে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
প্রথম পর্বের পর চারদিন বিরতি দিয়ে শুরু হচ্ছে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। তবে বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর ময়দানের ছামিয়ানার নিচে জমায়েত হওয়া মুসল্লিদের উদ্দেশে অনানুষ্ঠানিক বয়ান শুরু হয়েছে।
আগামী রোববার জোহরের নামাজের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এ বছরের ইজতেমা শেষ হবে।
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে রাজধানীর ঢাকাসহ ১৬টি জেলার মুসল্লিদের ইজতেমাস্থলে আসা অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ইজতেমামুখী মানুষের ঢল নামে টঙ্গীর দিকে। বাস, ট্রাক, ট্রেন, ট্রলারসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা যোগ দিচ্ছে ইজতেমায়।
বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বি প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, বিশ্ব ইজতেমার এ পর্বে ঢাকাসহ ১৩ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। এজন্য ইজতেমা ময়দানকে ২৮টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ব ইজতেমার এ পর্বেও বিদেশি মুসল্লিরা অংশ নেবেন।
আজ শুক্রবার হওয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা ময়দানে। গাজীপুর, ঢাকার উত্তরা ও আশপাশের এলাকা থেকে লাখ লাখ মুসল্লি যোগ দেবেন এই জুমার নামাজে।
ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে এরই মধ্যে কয়েক লাখ মুসল্লি ইজতেমা মাঠে সমবেত হয়েছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে। তারা নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছে। প্রথম পর্বে অংশ নেয়া বেশ কিছু বিদেশি মুসল্লি দ্বিতীয় পর্বেও অংশ নেয়ার জন্য ময়দানের বিদেশি নিবাসে রয়ে গেছেন।
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় মুসল্লিদের অংশ নেয়ার জন্য জেলাওয়ারি পুরো প্যান্ডেলকে ২৮টি খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। এতে ঢাকার একাংশসহ ১৩টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবে। দ্বিতীয় পর্বে দেশের বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা খিত্তাওয়ারী যেভাবে অবস্থান নেবে তা হলো-১ থেকে ১০ নম্বর এবং ১৮ ও ১৯ নম্বর খিত্তায় ঢাকা জেলা, ১১ ও ১২ নম্বর খিত্তায় জামালপুর, ১৩ নম্বর খিত্তায় ফরিদপুর, ১৪ নম্বর খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ১৫ নম্বর খিত্তায় ঝিনাইদহ, ১৬ নম্বর খিত্তায় ফেনী, ১৭ নম্বর খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ২০ নম্বর খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ২১ ও ২২ নম্বর খিত্তায় কুমিল্লা, ২৩ ও ২৪ নম্বর খিত্তায় রাজশাহী, ২৫ ও ২৭ নম্বর খিত্তায় খুলনা, ২৬ নম্বর খিত্তায় ঠাকুরগাঁও এবং ২৮ নম্বর খিত্তায় পিরোজপুর জেলা।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দফার সব প্রস্তুতি দ্বিতীয় দফাও বহাল রয়েছে। এরই মধ্যে মুসল্লিরা ইজতেমাস্থলে আসতে শুরু করেছে।
গত ১৪ জানুয়ারি (রোববার) প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতের পর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার ময়দান প্রস্তুতের জন্য ইজতেমায় আসা তাবলিগ জামাতের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। তারা ইজতেমার প্রথম পর্বে মুসল্লিদের ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে পুরো ময়দানকে উপযোগী করে তুলেছে। এ জন্য ময়দানে তাবলিগের কর্মীরা বেশ কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে এ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালায়।
এ ছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও ময়দান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজে অংশ নেয়। আগামী ২১ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
এবারও বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম-উত্তর দিকে বিদেশি মুসল্লিদের অবস্থানের জন্য বিশেষ আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। বিদেশি নিবাসে রন্ধনশালায় সার্বক্ষণিক গ্যাস ও বিশুদ্ধপানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সেখানে অ্যাম্বুলেন্স ও টেলিফোনসহ প্রয়োজনীয় আধুনিক সুবিধাদি রয়েছে। এ ছাড়া বিদেশি নিবাসে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। এবার ক্রমবর্মান বিদেশি মুসল্লিদের জন্য ২০ শতাংশ আবাসনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ