নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেসরকারি হাসপাতালে সেবার নামে হয়রানি ও অর্থ আদায় বন্ধ করতে সরকার নতুন আইন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘অনেকে ফাইভ স্টার হোটেলের মতো হাসপাতাল চালান। তাদের বোঝা উচিত, মানুষ জীবন বাঁচাতে হাসপাতালে যায়। অথচ এই রোগীদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এটা একটা ক্রাইম।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালি বিধির ৭১ বিধিতে জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুর-ই হাসনা লিলি চৌধুরী এ সংক্রান্ত নোটিশটি উত্থাপন করেন। নোটিশের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বেসরকারি হাসপাতালে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তারাও অনেক অভিযোগ পেয়েছেন। মুমূর্ষু রোগীকে আটকে রেখে টাকা আদায় করা হয়। মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করা হয়। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, রোগী মারা গেছে, কিন্তু রোগী লাইফ সাপোর্টে আছে বলে টাকা আদায় করা হয়েছে।’
চিকিৎসক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজির উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসা নিয়ে তিনি অনেক কথা বলেন। কিন্তু চিকিৎসায় অবহেলা নিয়ে কিছু বলেন না। কারণ এখানে শ্রেণিস্বার্থ কাজ করে।’
এর আগে বিরোধী দলের সদস্য নূর ই হাসনা লিলি চৌধুরী নোটিশে বলেন, ‘রাজধানীসহ দেশের বেসরকারি হাসপাতালে আইসিসিইউতে লাইফ সাপোর্টের নামে রোগীকে আটকে রেখে লাখ লাখ টাকা আদায় ও নানা ধরনের হয়রানি করা হয়।’
এদিকে লিলি চৌধুরী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে করা তার প্রশ্নে বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘বারডেম একটি বড় হাসপাতাল। কিন্তু সেখানে চিকিৎসার জন্য আমরা সংসদ সদস্যরা গেলে যে আচরণ করা হয়, তাতে বলার অপেক্ষা রাখে না, সাধারণ মানুষের প্রতি কী ব্যবহার করা হয়।’
লিলি তার প্রশ্নে বারডেম হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি জনগণের জন্য হেল্থ ইন্স্যুরেন্স চালুর বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান। জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বারডেম একটি বেসরকারি হাসপাতাল। যেখানে যদি এ ধরনের অবহেলা ঘটে। তাহলে বিষয়টি নিশ্চয়ই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।’
এদিকে হেল্থ ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘সরকার বিদেশি অর্থায়নে টাঙ্গাইলেল মধুপুর ও ঘাটাইলে অতিদরিদ্র মানুষের জন্য পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে এ ধরনের ইন্স্যুরেন্স চালু করেছে। এখানে হেল্থ কার্ডের মাধ্যতে তারা ৪০ ধরনের রোগের চিকিৎসা পেয়ে থাকেন। এখানে অর্থমন্ত্রী উপস্থিত রয়েছেন। তিনি যদি অর্থের যোগান দেন, তাহলে তারা সারা দেশে এই হেল্থ কার্ড চালু করা হবে।’
দৈনিক দেশজনতা /এন আর