২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:৩৫

পরকীয়ার জেরে স্বামী খুন, স্ত্রীসহ তিনজনের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পাবনায় স্বামী হত্যায় স্ত্রীসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন রাজশাহীর আদালত। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পাবনা সদর থানার গোপালপুর এলাকার গোলাম মোহাম্মদের মেয়ে কুলসুম নাহার ওরফে বিউটি (৪৬), আতাইকুলা উপজেলার রাণীনগর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৪৭) এবং একই গ্রামের ইয়াসিন মোল্লার ছেলে সোলেমান আলী (৪৫)।

কুলসুম নাহারের স্বামী মোশাররফ হোসেন ওরফে খোকন মৃধাকে (৫০) শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে তাদের এই দণ্ড দেওয়া হয়। নিহত মোশাররফ পাবনা সদর থানার টেকনিক্যাল মোড়ের আশরাফ আলীর ছেলে। মোশাররফ হোসেন লালনের একজন ভক্ত ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় শুধু বিউটি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি ঘটনার পর গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিন নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এই তিন আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত কুলসুম নাহারকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, টাকায় মোবাইল নম্বর পেয়ে এক ছেলে ও দুই মেয়ের মা কুলসুম নাহারের সঙ্গে কথা শুরু করেন রুহুল আমিন। পরে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। একবছর ধরে চলা এ সম্পর্কের জেরে তারা অবৈধ সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন।

একপর্যায়ে তারা মোশাররফ হোসেনকে তাদের ‘পথের কাঁটা’ মনে করেন। তাই তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১১ সালের ৩০ জুন রাতে কুলসুম নাহারের পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন তার বন্ধু সোলেমান আলীকে নিয়ে পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া মহল্লায় মোশাররফের ভাড়া বাসায় যান।

এরপর তারা মোশাররফের ঘরে লুকিয়ে থাকেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোশাররফ হোসেন ঘরে ফিরলে তারা তিনজন মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর গুম করতে লাশ একটি বস্তার ভেতর ঢোকানো হয়। কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেয়ে যান। তখন রুহুল আমিন ও সোলেমান আলী পালিয়ে যান।

এরপর ওই রাতেই পাবনা সদর থানা পুলিশ গিয়ে মোশাররফের বাড়ি থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। এ সময় তার স্ত্রী কুলসুম নাহারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে পরদিন থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়। এ মামলার বিচারকাজ চলাকালে মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, আসামি কুলসুম নাহার একমাসের মধ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন। তার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন আইনজীবী মাহমুদুর রহমান রুমন।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :জানুয়ারি ১৬, ২০১৮ ৩:০১ অপরাহ্ণ