নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয়করণের দাবিতে শীতের মধ্যে শুয়ে আছি। কেউ দেখলে মনে হবে লাশ পড়ে আছে। মরে যাব তবুও নিজেদের অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরব। হাতে স্যালাইন নিয়ে টানা ৫ দিন ধরে অনশনে থাকা শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান এসব কথা বলেন। অনশনে থাকা এই শিক্ষকের আক্ষেপ, কেন সরকারের তরফ থেকে মেডিকেল সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না, তাহলে চিকিৎসা সেবায় কিভাবে দেশ এগিয়ে গেলো, এখনো কেউ মানবিক হতে পারল না কেন?
মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। এখন পর্যন্ত ১২৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এদিকে, অনশন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবছেন না শিক্ষকরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। তার কথায় আমাদের আস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে যেকোনো ঘোষণা আসলে অনশন থেকে সরে দাঁড়াব। এর বাইরে আর কিছু না। ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালনের পরও শিক্ষকদের দাবি না মানায় ৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।
অনশনে থাকা শিক্ষকরা জানান, ১৯৯৪ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করা হয় ৫’শ টাকা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণির কার্যক্রম একই হলেও ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে সরকার। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি মাসে ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন হলেও ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা সরকারের থেকে কোনো বেতন পাচ্ছেন না। যতদিন সরকারের তরফ থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ না করা হবে, ততদিন রাস্তায় অনশনে থাকবেন শিক্ষকরা।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ