নিজস্ব প্রতিবেদক:
শুধুমাত্র চোরাই পথে ইলিশ পাচার ঠেকাতে বৈধ পথে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।চোরাই পথে ইলিশ পাচার হওয়ায় রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এমনকি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও যখন তা ঠেকাতে পারছে না তখন বাধ্য হয়েই সরকার বৈধ পথে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে সম্মেলন কক্ষে সদ্য প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘দেশীয় ইলিশ চোরাই পথে যখন বর্ডার পার হয়ে অন্য রাষ্ট্রে যায় তখন বড় বড় ইলিশই যায়। কত বেশি পরিমাণে ইলিশ এভাবে চলে যায় তা আজও ঠিক করে বলা যাচ্ছে না।’ ‘পাচারকারীরা জীবনের অনেক বেশি ঝুঁকি নিয়ে এসব ইলিশ বিদেশে পাচার করছে। তাদের ঠেকাতে আমরা দফায় দফায় বিজিবির সাথেও মিটিং করেছি। নতুন করে পাওয়া অনেক বড় সমুদ্রসীমা পাহারা দিয়ে ইলিশ পাচার ঠেকানো কঠিন হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
মন্ত্রি আরো বলেন, ‘অবৈধপথে পাচারের পথ সংকুচিত করতেই বৈধপথে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ গরুর মাংসের দাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে মাংসের দাম কম। কাজেই অতীতের পর্যায়ে দাম নিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য কঠিন হবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে দামের ব্যাপারটা মেনে নিতে হয়।’
‘তারপরও আপনারা (সাংবাদিকদের) যতটুকু অতিরিক্ত মনে করছেন সেটুকু এক থেকে দুই বছরের মধ্যে দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো,’ গরুর মাংসের দাম নিয়ে এমনই আশ্বাস দেন নারায়ন চন্দ্র চন্দ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের উৎপাদন যদি আমাদের দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারে তাহলে বাইরে থেকে গরু আমদানী কেন।’
‘তাতে আমাদের দেশের খামারীরা ধরা খাবে। দেশীয় উৎপাদনকারীরা ঠকে এমন কাজ অবশ্যই করবো না। আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম থাকে সে দামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে যদি আমরা দেশীয় উৎপাদন দিয়ে সাপ্লাই করতে পারি তাহলে ইন্ডিয়া থেকে গরু আনা সরকার কোনভাবেই বরদাস্ত করবে না,’ বলেন তিনি।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও আমাকে শক্তভাবে বলেছেন দেশীয় খামারীদের রক্ষা করতে অবৈধভাবে গরু আমাদানির কোনো অনুমতিতো দেওয়া হবেই না, বরং চোরাই পথেও গরু আনা যেকোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে।’ ‘বর্তমানেও উৎপাদনের মাত্রা যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে বাইর থেকে গরু আমদানীর কোনো প্রয়োজন নেই,’ বলেন মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জেলেদের দাদনের মাধ্যমে যাতে মাছ আহরণে সহযোগিতা নিতে না হয় এজন্য এক হাজার নয়শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বর্তমানে পাইপলাইনে রয়েছে। আমি আশা করছি এই প্রকল্প বাস্তবায়ণ করতে পারলে জেলেরা আর দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিতে হবে না।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ