নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানী ঢাকায় রিকশাগুলোকে এলাকাভিত্তিক চলাচলের জন্যে নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পর বড় রাস্তায় কোনো রিকশা চলবে না। এরফলে দুর্ঘটনা হ্রাস ও যানজট নিরসনে তা সহায়ক হবে বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদ খন্দকার এম আহসান হোসেন। কমিউনিটি ভিত্তিক রিকশা চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই এধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান।
ঢাকার অন্যতম বাহন রিকশার সুষ্ঠভাবে চলাচল নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আর এর সাথে জড়িত শ্রমিকদের পুনর্বাস ও অধিকার নিশ্চিত করতে আজ একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উদ্যোগতারা বলছেন এই খাতটি সঠিকভাবে পরিচালনা করা না হলে হুমকিতে পরবেন সংশ্লিষ্ট বহু সংখ্যক শ্রমিক। পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব এই পরিবহনটিকে প্রতিবন্ধীদের চলাচলেও উপযোগী করে তুলতে হবে। তবে এমন একটি অনুষ্ঠানের আর কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
এম আহসান হোসেন বলেন, ঢাকার আশেপাশে ৫ লাখ রিকশা চলে। তাই রিকশাকে যদি আমরা প্রমোট করি তাহলে এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষ যাদের পরিবারে যদি ৫ জন করে মানুষ থাকে তাহলে ২৫ লাখ মানুষ রিকশা চলাচলের ওপর নির্ভরশীল। গুরুত্ব সহকারে বিষয়টিকে আমরা বলছি ‘রিকশা ইন্ডাস্ট্রি হিউম্যান রাইটস পারেসপেকটিভ’।
রিকশা ইন্ডাস্ট্রি বলতে কী বোঝাচ্ছেন এবং সেটা কোন দিকে যেতে পারে? জবাবে তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রি বলতে সবসময় কারখানা বোঝানো হবে এটা না। এখানে রিকশা ইন্ডাস্ট্রি বলতে বোঝানো হয়েছে রিকশা, রিকশার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট মানুষ এবং তাদের কর্মকা-। রিকশা পরিবেশ বান্ধব গাড়ি হলেও রাস্তায় যখন হাই স্পিড ও লো স্পিড গাড়ি চলে তখন একটু ঝামেলা হয়, তাই তাদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আপনারা কী বলছেন?
জবাবে তিনি বলেন, যখন গতির তারতম্য হয় তখন এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। কিন্তু যখন দূরপাল্লার গাড়ি সাথে স্বল্প পাল্লার গাড়িকে রাখেন, তখন রিকশা একা দায়ী নয়। আপনি বলছেন রিকশা যানবাহন নয় এটি জীবিকারও একটি অংশ। তবে গ্রাম থেকে যদি কেউ নতুন ঢাকায় এসে রিকশা চালনো শুরু করে তখনতো তারা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে কিছুই জানে না, এই ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা কিভাবে আনা যায়?
জবাবে তিনি বলেন, ঢাকায় আসে তারা মূলত দুইভাবে রিকশা চালায়। একটি হচ্ছে রেডি রিকশা এটিতে তারা এসেই রিকশা চালায় এবং আর একটি হচ্ছে তারা তাদের ইচ্ছা মতো রিকশা চালাতে পারবে। এছাড়া তারা কিন্তু লাইসেন্সের জন্য ভাড়া হিসেবে পে করে। লাইসেন্সে ফি কিন্তু অনেক কম। তবে তাদের সে সুযোগটা দেওয়া হয় না। আর তারা ট্রেনিং নিতে চায় কিন্তু তার সিস্টেমেটিক কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই এই দুটো বিষয় যদি নিশ্চিত করা যায় তাহলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
১৯৮০ সালের পর থেকে রিকশার নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না তবে এখন যে লাখ লাখ রিকশা ঢাকায় ঢুকছে তাহলে সেটার নিয়ন্ত্রণ কিভাবে সম্ভব? জবাবে তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক ছত্রছায়ার কারণে এবং কিছু পুলিশের জন্য এতো লাখ লাখ রিকশা প্রবেশ করছে। যদি এর অর্ধেক রিকশা থাকতো তাহলে সবকিছু শৃঙ্খলা মোতাবেক সম্পন্ন হতো।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ