নিজস্ব প্রতিবেদক:
উন্নত গ্রাহক সেবা প্রদান ও নন-টেকনিক্যাল লস কমিয়ে আনতে আরও ৫ লাখ স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার বসানো হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ৪২৬.৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৪১২.৫৪ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১৩.৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্তনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় এই সংক্রান্ত প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, “ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ওজোপাডিকো) এলাকার জন্য স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং” শীর্ষক এ প্রকল্প ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২১টি জেলার ২১ উপজেলা এসব প্রি-পেইড মিটার বসানো হবে। এগুলো বসানোর মাধ্যমে নিয়মিত রাজস্ব আদায় করা; ডিমান্ড সাইড লোড নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপন সহজতর করা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির আদেশ নং-৫৯ দ্বারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের জন্য ১৯৭২ সালের ১ মে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) একটি সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আর বিউবো’র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিতরণ জোনকে বিতরণ কোম্পানি হিসেবে ওজোপডিকোকেই সর্বপ্রথম কোম্পানি ঘোষণা করা হয়।
ভৌগলিকভাবে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাধীন সদর উপজেলাসমূহ ও ২০টি উপজেলা নিয়ে ওজোপডিকো গঠিত, যার বিস্তৃতি প্রায় ৪১৯০.২ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৫.২০ মিলিয়ন।
খুলনা, যশোর, নড়াইল, বাগেরহাট, মাগুরা, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাদহ, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলার পল্লী বিদ্যুতায়ন করা হয়। ৬টি পরিচালন ও সংরক্ষণ (প ও স) সার্কেল এবং ৪৮টি বিতরণ বিভাগ/ইউনিট নিয়ে ওজোপডিকো’র অবকাঠামো গঠিত।
বর্তমানে ওয়েস্ট জোনের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ৫৩১.৫ মেগাওয়াট। ১৫৩৫ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন ৬৬টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ৯৪২২৭৫ জন সংযোজিত গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা প্রদান করা হয়। ওজোপডিকো’র নন- টেকনিক্যাল সিস্টেম লস তুলনামূলক বেশি। সকল পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের ডাটা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যেসকল বিত্রয় ও বিতরণ বিভাগের সিস্টেম লস বেশি, প্রি- পেমেন্ট মিটার এর মাধ্যমে সেসকল বিত্রয় ও বিতরণ বিভাগের সিস্টেম লস অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়।
পোস্ট-পেইড মিটারের মাধ্যমে বিলকৃত টাকা সংগ্রহ করতে ২/৩ মাস লেগে যায়। তাছাড়া সরকারী/স্বায়ত্বশাসিত/আধা-সরকারী প্রতিষ্ঠানের অনেক বিল বকেয়া থাকে, যা আদায় করা অনেক কষ্টসাধ্য। কিন্তু প্রি-পেমেন্ট মিটার ব্যবহার করলে বকেয়া বিল থাকে না। গ্রাহকের অনুকূলে বরাদ্দকৃত লোড এর অতিরিক্ত লোড ব্যবহার করলে মিটার টেম্পার এর সংকেত দেখাবে এবং লোড বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এভাবে লোড নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওভারলোডেড ট্রান্সফরমারের লোডের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ প্রকল্পের আওতায় সিংগেল ফেজ স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সংগ্রহ করা হবে ৪ লাখ ৮৬ হাজার টি; থ্রি-ফেজ স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সংগ্রহ করা হবে ১৪ হাজার টি; ইউটিলিটি ভেন্ডিং স্টেশন স্থাপন করা হবে ৫৬টি; ইউটিলিপি কাস্টমাইজেশন সেন্টার স্থাপন হবে-২৮টি; হ্যান্ড হেলড ইউনিট স্থাপন হবে ৫৬টি, ১টি ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার স্থাপন করা হবে।
এ প্রকল্পের মতামত দিতে গিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য বেগম শামীমা নার্গিস বলেন, প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বর্পূণ। তাই প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ