নিজস্ব প্রতিবেদক:
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে রোববার। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই আবেদন করা যাবে বলে গত ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞপ্তির পর গত ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দল হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে ইসিতে অন্তত ১৫টি আবেদন জমা পড়েছে। এগুলোর মধ্যে মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (বাকশাল), বাংলাদেশ আলোকিত পার্টি, বাংলাদেশ মঙ্গল পার্টি, বাংলাদেশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিপিডিপি), বাংলাদেশ সমাধান ঐক্য পার্টি, বাংলাদেশ কর্মসংস্থান আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক গাজী, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, জমিয়তে নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ জালালী পার্টি ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)।
এ বিষয়ে ইসির সহকারী সচিব রৌশন আরা বেগম জানান, তাদের কাছে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনের সময় শেষ হওয়ার পর করণীয় নির্ধারণে কমিশন বৈঠক করবে। তিনি জানান, বিজ্ঞপ্তির আগে যারা আবেদন করছেন, তাদেরটি গ্রহণ করা হবে না। তাদেরও পুনরায় আবেদন করতে হবে। আগেই নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, যথাযথ যাচাই-বাছাই করে এবার নিবন্ধন দেওয়া হবে। এক নেতা, এক দল- এমন কাউকে নিবন্ধন দেওয়া হবে না।
মূলত একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই আবেদন আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, তিনটির মধ্যে একটি শর্ত পূরণ হলেই তারা নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। শর্তগুলো হলো-
১) দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেকোনো জাতীয় নির্বাচনের আগ্রহী দলটি যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকেন।
২) যেকোনো একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেওয়া আসনগুলোয় মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পায় এবং
৩) দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকে।
ইসি সূত্র জানায়, এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগ্রহী নতুন ৪৩টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। এর মধ্যে ৪১টিই নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের ‘যোগ্যতার’ প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়। মাত্র দুটি দল শর্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কার্যালয় ও কমিটি থাকার তথ্য দিয়েছিল। এরপর তাদের নিবন্ধন দেয় কমিশন। দল দুটি হলো- বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। প্রথম বছরে ১১৭টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়। এর মধ্যে স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। আর আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ হয়। এছাড়া ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নামে নতুন একটি দলের নিবন্ধন দেওয়া হয়। বর্তমানে ইসির নিবন্ধনে ৪০টি রাজনৈতিক দল রয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি