নিজস্ব প্রতিবেদক:
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে প্রমাণিত হলো, বর্তমান সরকার আত্মস্বীকৃত চোর ও দুর্নীতিবাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, মন্ত্রীরা দুর্নীতি করে, শুধু যে অফিসার চোর তাই না মন্ত্রীরাও চোর, আমিও চোর, তাই ঘুষ না নিতে বলার সাহস আমার নাই। আমি বলতে চাই, দেশের শিক্ষামন্ত্রীর যদি এই বক্তব্য হয়, তাহলে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সততা, নৈতিকতার পাঠ কোথায় নেবে ? শিক্ষামন্ত্রী এক ভয়ঙ্কর বার্তা পাঠালেন শিক্ষাঙ্গনে-তার বক্তব্যে এটাই ফুটে উঠছে যে, ছাত্র-ছাত্রীরা তোমরা নীতি, নৈতিকতা, আদর্শ এবং ন্যায়বোধের বিবেকশাসিত উন্নত মানুষ হওয়ার বদলে তোমরা সহনীয় মাত্রায় দূর্নীতির পাঠ নিতে শেখো, তাহলেই তোমাদের সাফল্য আসবে।
শিক্ষামন্ত্রীর কথায় মনে হয়-সৃজনশীল, সৌম্য, সুশিক্ষিত মানুষ হওয়ার বদলে ছাত্ররা বখাটে হোক মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বক্তব্যে আরো প্রতীয়মান হয় যে, তিনি চাচ্ছেন-ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জ্ঞানদীপ্ত প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আদর্শ জীবন গঠনে উদ্বুদ্ধ না হয়ে বরং দুর্নীতি, দখলবাজী, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস, দলবাজী, দুর্বৃত্তপনা, ইভটিজিং, মাদকসহ লুটপাট করার অর্থবিত্তের কাছে নতি স্বীকার করতে শিখুক। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যে জাতির হৃদয়ের স্পন্দনকে থামিয়ে দেয়ার সামিল। দেশে বিদ্যমান নৈরাজ্যকর অমানিষার মধ্যে তার এই বক্তব্য দেশের জন্য আরো ভয়াবহ উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী নিজেদের লোকদেরকে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও কেনা বেচার সুযোগও করে দিয়েছেন সুকৌশলে দাবি করে রিজভী বলেন, আওয়ামী সরকারের মন্ত্রীরা এক অভিনব কায়দা উদ্ভাবন করেছেন যেখানে প্রাইমারীর প্রথম শ্রেণী থেকে শুরু করে পিইসি, জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি, এইচএসসি, বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, মেডিকেল ভর্ত্তি পরীক্ষা, চাকুরিতে নিয়োগ পরীক্ষা সবখানেই প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস হয় লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে। এতো কিছুর পরও মিডিয়ার বদৌলতে এই প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির সাথে যারা জড়িত তারা সরকারেরই মায়ামুগ্ধ ছাত্রলীগের সোনার সন্তানেরা। শিক্ষামন্ত্রীর কথায় মনে হচ্ছে, তিনিই এসব কেলেঙ্কারির উৎসাহদাতা- বলেন তিনি।
সরকারই চেয়েছে চালের দাম কিছুটা বাড়ুক- অর্থমন্ত্রীরর এই বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বিনা ভোটের সরকারের অর্থমন্ত্রী অনেক সময় সত্য কথা প্রকাশ করে দেন। জনগণের সঙ্গে বর্তমান সরকার যে তামাশা করে সেটি প্রমান করলেন অর্থমন্ত্রী। জনগণের টাকা লুটপাটে উৎসাহিত হয়ে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করতে দ্বিধা করছে না। একমাত্র কান্ডজ্ঞানহীন ভোটারবিহীন, বিবেকহীন, নির্দয়, নিষ্ঠুর শাসকরাই খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধিতে আনন্দিত হয়, তামাশা করে- বলেন রিজভী।বিএনপির পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সরকারের গণদুশমনমূলক নীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান- তিনি
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, মীর সরাফত আলী সপু, আসাদুল করিম শাহীন, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ