আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে একতরফাভাবে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি দিয়েছে, এরপর ফিলিস্তিনিরা আর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শান্তি প্রস্তাব মেনে নেবে না। খবর বিবিসির। তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে এই শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অসততার পরিচয় দিয়েছে, সেটা প্রমাণিত। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে দেয়া স্বীকৃতিকে প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এক প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাশ হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলসহ মাত্র ৯টি দেশ এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় বহু দশক ধরেই প্রধান মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র। বলা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি নতুন শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করছে যা ২০১৮ সালে দুই পক্ষের কাছে পেশ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ইসরায়েলের পক্ষে কট্টর অবস্থান নিয়েছে এবং জেরুজালেমকে দেশটির রাজধানী বলে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাই এই দেশটির মধ্যস্থতা আর মেনে নিতে পারছে না ফিলিস্তিনিরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ নিয়ে ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র কার্যত কূটনৈতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়ার পর আজ শুক্রবার ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শান্তি আলোচনায় তারা আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা মেনে নেবেন না। প্যারিসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে এক সাক্ষাতের পর তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্র আর এই শান্তি প্রক্রিয়ায় কোন সৎ মধ্যস্থতাকারী নয়, সেটাই তিনি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কোন শান্তি প্রস্তাব আমরা আর মানবো না, কারণ তারা পক্ষপাতদুষ্ট এবং তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। যেসব দেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে, তাদের ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টারও নিন্দা করেন তিনি। ‘কোনো দেশকে অর্থ দিয়ে কিনে জোর করে যে কোন সমাধান চাপিয়ে দেয়া যায় না, সেটা থেকে অন্যরা শিক্ষা নেবে বলে আমি আশা করি।’ জাতিসংঘের ভোটে কূটনৈতিক পরাজয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, এই বিশ্বসংস্থায় যুক্তরাষ্ট্র বিশাল অংকের চাঁদা দেয়। তিনি এমন হুমকিও দেন যেসব দেশ জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রকে এভাবে অশ্রদ্ধা করেছে, ভবিষ্যতে সেসব দেশের বেলায় এই ঘটনার কথা মনে রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি