নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ধান কাটা নিয়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। এসময় নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। আহতদের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলার পুঁটিখালি ইউনিয়নের সোনাখালি গ্রামে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- মোরেলগঞ্জ উপজেলার চালিতাবাড়ি গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও একই গ্রামের পলাশ শেখ। নিহতরা রহিম খানের পক্ষের। তবে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এটা সংঘর্ষ নয়, এটা একপক্ষের পরিকল্পিত হামলা বলে দাবি করেছেন। তবে এই সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে উভয়পক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
আহতরা হলেন- কবির শেখ, মজিবর শেখ, হেমায়েত খান, জাহিদ শেখ, শিউলী ও নাজমা। এদের মধ্যে প্রথম দুজনকে আশংকাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য চারজনকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, ইব্রাহিম শেখ ও পলাশ শেখকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এ দুজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়। অন্যদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষে এক পক্ষের দাবি করে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সোনাখালি গ্রামের আব্দুর রহিম খানের সাথে প্রতিবেশী শহীদুল খানের এক বিঘা জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে চলতি আমন মৌসুমে রহিম খান আমনের চাষ করে। শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ প্রতিপক্ষ শহীদুল খান ১২/১৪ জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটতে যায়। এসময় রহিম খানের স্বজনরা ধান কাটার খবর পেয়ে তাদের বাধা দিতে যায়। এসময় শহীদুলের লোকজন তাদের কাছে থাকা ধারালো ছুরি কাচি নিয়ে হামলা চালায়। এতে রহিম খানের দুই আত্মীয়ের মৃত্যু হয়। আহত হয় অন্তত ৭/৮ জন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই জমির বিরোধ মেটাতে চলতি মাসে পুঁটিখালি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহচান মিয়া শামীম দুই পক্ষকে নিয়ে বসতে চাইছিলেন। সেই অবস্থায় শহীদুল খান এই হামলা চালালেন বলে দাবি তার। পুঁটিখালি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহচান মিয়া শামীম বলেন, জমি নিয়ে রহিম ও শহীদুল খানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধ নিয়ে বসার কথা ছিল। কিন্তু তারা কেন কার উসকানিতে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ল তা বুঝতে পারছি না। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন তা পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তবে ঘটনার বিস্তারিত জানতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, সেখানে না গিয়ে বলা যাবে না।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ