নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে একদিকে ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক প্রভাব ও যোগসাজসের মাধ্যমে লাগামহীন জালিয়াতি, দুর্নীতি ও ঋণ খেলাপীর দৌরাত্ম্য, অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের একাংশের অ্যাডহক ভিত্তিক অকার্যকর পদক্ষেপ ও দৃশ্যমান অসহায়ত্বের ফলে সৃষ্ট অভূতপূর্ব অরাজকতা ও ঝুঁকির প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে চলমান সংকট নিরসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে তার সুপারিশের ভিত্তিতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি নিরসন পরিকল্পনাসহ একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ছাড়া সরকার ও বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো বিকল্প নেই।
বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খাতের পাশাপাশি বহুল-বিতর্কিত ফারমার্স ও এনআরবিসির মত ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকে সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে অনিয়মের অন্তর্নিহিত সুনির্দিষ্ট কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় অনিয়ম লাগামহীন হয়েছে, একই সঙ্গে বেড়েছে আমানতকারীসহ দেশবাসীর মাঝে দুশ্চিন্তা ও আস্থার সংকট’।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কোম্পানি আইন সংশোধন করে বেসরকারি ব্যাংকিং খাতে অনিয়ন্ত্রিত ও জবাবদিহিহীন পরিবারতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। টিআইবি মনে করে, অবৈধ উপায়ে ত্বরিত মুনাফা ও সম্পদলোভী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও চক্রকে চিহ্নিত করে আইনি প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করতে পারলে এ খাতে আইন অমান্যের চলমান বেপরোয়া ধারা রোধ করা যাবে না।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানসমূহকে যেন কোনো প্রকার চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে না হয় ও ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সৎসাহস থাকতে হবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ