বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
শোক থেকে শক্তি, প্রযুক্তিতে মুক্তি’ স্লোগানে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ল্যাপটপ ফেয়ার। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
বিআইসিসির মিডিয়া বাজারে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের জ্যেষ্ঠ্য পুত্র সাংবাদিক-নির্মাতা বিপুল রায়হান, বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এক্সপো মেকারের কৌশলগত পরিকল্পনাকারী মুহম্মদ খান, এইচপির বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার সালাউদ্দিন মো. আদিল, ডেল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিকুর রহমান।
বিশেষ অতিথি বিপুল রায়হান বলেন, লাল সবুজের পতাকা আমরা পেয়েছি। পেয়েছি সুন্দর একটি দেশ; এখন প্রয়োজন দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাই সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিকাশ যত বেশি হবে আমরা এগিয়ে যাবো তত। তবে একটি কথা, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত করতে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। কারণ তালিকা করে বুদ্ধিজীবি হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বার বলেন, দেশের অসাধারণ দুটি কাজ হয়েছে। সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার নিয়ে। এছাড়া হার্ডওয়্যার উৎপাদনে উর্বরভূমিতে পরিণত হয়েছে আমাদের দেশ। কিন্তু ব্যাপারটি এত সহজ ছিল না। প্রযুক্তিতে এখন অনেক এগিয়েছি আমরা। বাংলাদেশের দিকে সবাই বিস্ময়কর চোখে তাকায়। কারণ আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে দেশকে ঘোষণা দিয়েছি তখনও অনেকের তুলনায় পিছিয়ে ছিলাম। সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখ করে এই প্রযুক্তিবিদ বলেন স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের প্রযুক্তির যে অগ্রগতি হয়েছে তার সিংহভাগ হয়েছে বিগত সাত বছরে।
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, আমরা যখন উইকিডিয়াতে কাজ শুরু করি তখন এক হাজার জন শহীদের নাম ছিল। এখন এর সংখ্যা আরো বেড়েছে। আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। যেটা গুগল সার্চ করলেই বোঝা যায় কতটুকু এগিয়েছি। ২০০৯ সালে যখন ঘোষণা হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ, তখন থেকে অনেক কাজ করতে হয়েছে; এখন চলছে। তবে আশার কথা আমরা অনেক এগিয়েছি এবং আরো এগিয়ে যাবো।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এক্সপো মেকারের আয়োজনে এটি দেশের ১৯তম ল্যাপটপ প্রদর্শনী। এবারের আয়োজনে একটি মেগা-প্যাভিলিয়ন, পাঁচটি স্পন্সর প্যাভিলিয়ন, ১৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ২৭ স্টলে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তির পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। মেলায় বিভিন্ন পণ্যে রয়েছে ছাড় ও নানা ধরনের অফার।
এক্সপো মেকারের কৌশলগত পরিকল্পনাকারী মুহম্মদ খান জানান, পূর্বের মেলাগুলোতে শিক্ষার্থী, তরুণ প্রজন্মসহ সকলের অংশগ্রহণ ছিল প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। আশা করছি এবারের মেলা আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। ল্যাপটপের পাশাপাশি মেলায় সর্বশেষ প্রযুক্তি ও ডিজাইনের ডিভাইস নিয়ে হাজির হয়েছে অংশগ্রহনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর সর্বশেষ মডেলের ল্যাপটপের পাশাপাশি আনুষাঙ্গিক যন্ত্রাংশও পাওয়া যাচ্ছে। সব ধরনের পণ্যেই পাওয়া যাচ্ছে বিশেষ ছাড় এবং সঙ্গে উপহার।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় কিংবা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে। প্রতিবন্ধীরাও বিনামূল্যে প্রবেশের এই সুযোগ পাবে। মেলায় টিকিটের অর্থ দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন সাংবাদিকের চিকিৎসায় সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ