নিজস্ব প্রতিবেদক:
এ বছর থার্টিফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত স্থানে নাচ-গান করা যাবে না। এমনকি রাতে আতশবাজি বা পটকাও ফুটানো যাবে না। যারা মদ্যপান করেন তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষক-ছাত্ররা তাদের নিজস্ব গাড়ী ছাড়া অন্য কোনো গাড়ীতে চলাচল করতে পারবে না। এমনকি সেদিন সেখানেও দোকানও বন্ধ থাকবে। বুধবার সচিবালয়ে থার্টিফার্স্ট নাইট ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
চার্চগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তা
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বড় গির্জাগুলোয় মেটাল ডিটেক্টরসহ ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনের জন্য আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতার জন্য গির্জাগুলোয় সেখানকার কর্তৃক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তাদের অনুষ্ঠান আয়োজনে কী ধরনের আশঙ্কা তা জানার চেষ্টা করেছি। সারাদেশে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গির্জাগুলোতে কিভাবে নিরাপদে অনুষ্ঠানগুলো হয় সেজন্য আলোচনা করেছি।’
‘ঢাকা মহানগরীতে ৭৫টি গির্জা আছে, যার মধ্যে ৪টি বড় গির্জা রয়েছে তেজগাঁ, মিরপুর, বনানী এবং বাড্ডায়। এ গির্জাগুলোতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এসব জায়গায় ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সারাদেশে খ্রিষ্টান অধ্যুষিত এলাকায় শান্তিরক্ষা সমন্বয় কমিটি থাকবে। যারা পুলিশের ফোকাল পয়েন্টের সাথে সবসময় যুক্ত থাকবে।’
ইনডোর প্রোগ্রামে বাধা নেই
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘রাস্তাঘাটে ইভটিজিংসহ নানা বিশৃঙ্খলা বন্ধ হয়েছে। থার্টিফার্স্ট নাইটে উন্মক্ত স্থানে কোনো সমাবেশ করা যাবে না। তবে ইনডোর প্রোগ্রাম করা যাবে। যদি কেউ ইনডোর প্রোগ্রাম করতে নিরাপত্তার প্রয়োজন মনে করে তাহলে তাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘থার্টিফার্স্ট নাইটে ইভটিজিং এবং নেশাগ্রস্তদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘থার্টিফার্স্ট নাইটে আমাদের দেশে আগে তরুণরা রাতটি উদযাপনের জন্য বাধাহীনভাবে চলাফেরা করতো। আপনারা দেখেছেন গত দুই তিন বছর ধরে এমন উচ্ছখৃলভাবে চলাফেরা করতে দেওয়া হয় না। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না।’
অভিজাত পাড়ায় প্রবেশে বিধি-নিষেধ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা ও বিদেশি খ্রিস্টান মেহমান যেসব এলাকায় থাকবেন এমন সব এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা শহরে ৫০০০ এর অধিক নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। এর বাইরেও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যাক নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ৩১ তারিখ রাত ৮টার পর থেকে কোনো বহিরাগত ঢুকতে পারবে না। তাদের ঠেকাতে আমরা সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবো।’
‘যারা ৮টার পর সেসব এলাকায় যেতে চায় তাদেরকে আমাদের সার্চ টিম সার্চ করে প্রয়োজন হলে ঢোকার অনুমতি দেবেন,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
আগ্নেয়াস্ত্র বহনে নিষেধাজ্ঞা
তিনি আরো বলেন, ৩১ ডিসেম্বর বিকেল থেকে ঢাকা শহরের সব এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এ দিন সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত কোনো লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র কেউ বহন বা প্রদর্শন করতে পারবে না।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ