নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈধ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম। মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। অধস্তন আদালতের বিচারকদের বহুল প্রতীক্ষিত শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির গেজেটটি সোমবার বিকালে প্রকাশ করা হয়। প্রসঙ্গত, অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির গেজেট প্রকাশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট থেকে দফায় দফায় সময় নিয়েছিল সরকার। এনিয়ে উচ্চ আদালত ও সরকারের মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েনেরও সৃষ্টি হয়েছিল। গত বছরের ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। এরপর বিধিমালা প্রণয়নে দফায় দফায় সময় চায় সরকার। সরকারপক্ষ থেকে বারবার সময় চাওয়ার বিষয়টি বিচার বিভাগকে জিম্মি করে রাখার মতো বলে মন্তব্য করে আপিল বিভাগ। গত ১৪ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের শুনানিকালে এ মন্তব্য করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আলোচিত মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। ওই রায়ের আলোকে ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। রায়ের নির্দেশনার অনুযায়ী গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে জানান আপিল বিভাগ। পরে অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণসংক্রান্ত বিধিমালার সংশোধন করে গেজেট প্রকাশে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। তা প্রকাশে ইতিমধ্যে কয়েক দফা সময় নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।
এরই মধ্যে আবারও গত ২৭ জুলাই বিধিমালার একটি খসড়া আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আপিল বিভাগে দাখিল করেন। পরে খসড়াটির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। গত ১৬ নভেম্বর রাতে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। ওই দিন বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। গত শুক্রবার আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শৃঙ্খলাবিধিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার গেছে বলে আমি জানি। আমি আশা করছি, শিগগিরই গেজেট প্রকাশ হবে।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি