২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:২৪

ভার্চুয়াল-অগমেন্ট রিয়ালিটি বিকাশে চাই ডিভাইস

দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক:

দেশে  ডিভাইসের স্বল্পতায় বিকশিত হচ্ছে না এআর ও  ভিআর প্রযুক্তি। আর্থিক সঙ্কটে এখনো বাংলাদেশে সেভাবে পরিচিত হয়ে উঠেনি বলে সম্ভাবনাময় অগমেন্টেড রিয়ালিটি (এআর) ও ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (ভিআর) খাতে নানা প্রকল্পগুলো সেভাবে কাজে আসছে না বলে জানিয়েছেন প্রযুক্তিবিদরা।

তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মেলা ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’ এর সমাপনী দিনে বিকালে ‘এআর ভিআর প্রেজেন্ট অ্যান্ড ফিউচার’ শিরোনামের এক সেমিনারে উঠে আসে গেইমিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপসের এআর, ভিআর প্রযুক্তির উৎকর্ষতার নানা দিক।

কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক পরিবেশকে বাস্তবতায় রূপান্তর করার প্রক্রিয়া হল ভার্চুয়াল রিয়ালিটি।

ফেইসবুক, গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফটসহ টেক জায়ান্টরা  যখন তাদের  এআর ও ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে নানা সেবা দিচ্ছে, তখন বাংলাদেশের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষা ব্যবস্থায় এই এআর, ভিআর প্রকল্পগুলো নিয়ে কাজ করতে  শুরু করেছে। কেউ  ইতিহাস ভিত্তিক অ্যাপস বানাচ্ছে, কেউ বা বানাচ্ছে গেইমিং অ্যাপস।

রাইজ আপ ল্যাবসের সিইও অ্যান্ড ফাউন্ডার এরশাদুল হকের সঞ্চালনায় আইসিটি ডিভিশনের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর মোবাইল গেমস অ্যান্ড এপ্লিকেশন- এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর কে এম আব্দুল ওয়াদুদ, ব্যাটারি ল ইন্টারঅ্যাকটিভের ফাউন্ডার ও চেয়ারম্যান মিনহাজ উজ সালেকীন ফাহমি,  ইন্টারঅ্যাকটিভ আর্টিফ্যাক্টের সিইও নুসরাত জাহান,  ড্রিমার্জ ল্যাবের সিইও তানভির হোসেন খান এই সেমিনারে অংশ নেন।

অগমেন্টেড রিয়ালিটিতে বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন জানানোর অ্যাপস তৈরি করেছেন এরশাদুল হক।

তিনি বলেন,  ‘আগামী বছরের মধ্যে ২০০ বিলিয়নেরও বেশি মুদ্রা যখন এআর ও ভিআর প্রকল্পগুলো থেকে আয় করা সম্ভব, তখন শুধুমাত্র ডিভাইসের স্বল্পতায় আমাদের তরুণরা দারুণ সম্ভাবনাময় এ খাতে কাজ করতে পারছে না। আর্থিক কারণে তরুণদের অনেকে এই ডিভাইসগুলো ব্যবহার করতে পারছেন না। তাই বলে কিন্তু বসে নেই ওরা, দেশে তরুণরা কিন্তু এআর ও ভিআর নিয়ে রীতিমতো গবেষণা শুরু করে দিয়েছে।’

গুগলের ট্রান্সলেট অ্যাপস, গগলস, স্কাই ম্যাপ, পোকেমন গেম, অ্যাপল-১০ মোবাইলগুলোতে এআর প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে তা তুলে ধরেন মিনহাজ উজ সালেকীন ফাহমি।  উইন্ডোজ ফোনের পরে অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের মোবাইল ফোনের চ্যাটিং, ক্যামেরা অ্যাপস নিয়ে কাজ করার সুযোগের কথাও তিনি জানান তরুণদের।

স্লাইড প্রেজেন্টেশনের ফাঁকে তানভির হোসেন খান ভিআর প্রযুক্তি নিয়ে বলেন, ‘ভিআর প্রযুক্তি নিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশি কাজ করতে পারি, ডিফেন্স ও মেডিকেল সায়েন্স  ইস্যুতে। বাস্তবে প্রশিক্ষণের সময় কিন্তু অনেক বেশি সময়, অর্থ  ব্যয় হয়, থাকে জীবনের ঝুঁকি। ভিআর প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের নানা দিকগুলো তাদের ডিভাইসে নিয়ে আসতে পারে।  তখন খরচ আরো অনেক কমে যাবে। একইসঙ্গে শিল্পখাতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি।’

ফাহমি জানান, প্রযুক্তিবিদরা ২০২১ সালের মধ্যে এআর খাতে ৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করছেন।  চার বছর পর এই প্রযুক্তি থেকে গোটা বিশ্ব বছরে ৪৪ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে।

এরশাদুল ও নুসরাত পরে জানান, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখন সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে।  এআর ও ভিআর প্রযুক্তি মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহার করা যাবে উপকৃত হবে শিক্ষার্থীরা।

নুসরাত বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীরা তখন আর ল্যাবের এক্সপেরিমেন্ট করতে ভয় পাবে না। ওরা এআর ও ভিআর- এ এসে নিজেদের ইচ্ছামতো এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবে।  তাতে কোনো ঝুঁকিরও আশঙ্কা থাকছে না।’

এক তরুণের প্রশ্নর জবাবে এরশাদ জানান, ইনগেজ ও অকোলাসের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যখন প্রতিবেশি দেশ ভারতে এই প্রযুক্তিগুলো নিয়ে কাজ করতে শুরু করেছে, তখন দেশে রয়ে গেছে আর্থিক সঙ্কট।

‘সহসা এই আর্থিক সঙ্কট মোকাবেলা করতে না পারলেও কিন্তু বসে থাকা যাবে না।  ছোট ছোট অ্যাপসের মাধ্যমেই হোক না শুরু। ডিভাইস আজকে আসছে না, একদিন আসবে। একদিন আমাদের সামর্থ্য হবে।’

আইসিটি ডিভিশন এ খাতে একটি প্রশিক্ষণ প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানান কে এম আব্দুল ওয়াদুদ।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৯, ২০১৭ ৯:৩৫ অপরাহ্ণ