নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সমাজে দুর্নীতিবাজ শকুনের উৎপত্তি ঘটেছে। এসব শকুনদের উৎখাত করতে চাই। দুর্নীতিবাজরা সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তাদের বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়ার এখনই সময়। শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতিবাজরা ব্যাংক লুট করছে, সরকারি কাজে ঘুষ নিচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে অনৈতিক কাজ করছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় অনৈতিক কাজ করছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে শ্রেণিকক্ষ পর্যন্ত সমস্যা তৈরি করছে। এরা সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সবাই এক হয়ে দুর্নীতিবাজদের সমুচিত জবাব দিতে হবে। দুদকের একার পক্ষে জবাব দেওয়া সম্ভব না। আমরা কেবল অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারি। দল-মত-নির্বিশেষে সকল মানুষের রুখে দাঁড়ানো ছাড়া দুর্নীতিবাজদের রুখে দেওয়া যাবে না।
হযরত ওমর (রা.)- এর একটি উদ্ধৃতি দিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘ওমর (রা.) বলেছিলেন- তোমরা রাতে এমন কাজ কর না, যাতে করে দিনের বেলায় মুখ লুকাতে হয়। আবার দিনে এমন কাজ কর না, যাতে রাতে অন্ধকারে মুখ লুকাতে হয়। তাঁর এই বক্তব্যের বিশেষত্ব হলো- লজ্জা বা আত্মপ্রবঞ্চনা মানুষের থাকতে হয়। এই সত্যটা সবার বোঝা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের বোঝা উচিত তারা যে সম্পদ দুর্নীতি করে অর্জন করেন, তা তারা ভোগ করতে পারেন না। এই সম্পদ তারা শরীর স্বাস্থ্য কিংবা বয়সের জন্য ভোগ করতে পারে না। তারা মূলত দুর্নীতি করে টাকা ও ক্ষমতার নেশার কারণে। এই ধরনের নেশা আমরা বন্ধ করতে চাই।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ভবিষ্যুত প্রজন্মের জন্য এমন একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ো, যাতে দুদকের মত প্রতিষ্ঠান দরকার না হয়। তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তোমরা বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাও। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত কর। তাহলে যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এদেশ সৃষ্টি হয়েছে, তাদের আত্মা শান্তি পাবে।’ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, দুদক সচিব ড. শামসুল আরেফিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ