বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
বিকল্প ব্যবস্থা রাখা সবসময়ই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। সম্প্রতি নাসার মহাকাশযান ভয়েজার ১-এর জেট থ্রাস্টার জ্বালিয়ে তাই আরেকবার প্রমাণ করলেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
এর আগে ২০১৭ সালে থ্রাস্টারগুলো সফলভাবে পরীক্ষা করা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার সেগুলো চালু করার ফলে সৌরমণ্ডলের সীমানার বাইরে আগুন জ্বালানোর ইতিহাস গড়ল মানুষ। এই প্রথমবার সৌরমণ্ডলের বাইরে এমন সাফল্য পেল আমাদের সভ্যতা।
১৯৮০ সালে শেষবার থ্রাস্টারগুলোকে জ্বালিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। তার ৩৭ বছর পর আবার জ্বলে উঠল নাসার অনুসন্ধানী নভোযানের জেট থ্রাস্টার।
বর্তমানে পৃথিবী থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি কিলোমিটার দূরে সৌরমণ্ডলের সীমানার বাইরে দুই তারার অন্তর্বর্তী শূন্যস্থানে রয়েছে ভয়েজার। পৃথিবী থেকে সেখানে আলো পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ১৯ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট।
সেখানে পানি বা মানুষ তো জমে বরফ হয়ে যাবেই, হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মতো হালকা গ্যাসও জমে যাবে মুহূর্তে। সেখানে নভোযানের অভিমুখ ঠিক করার জন্য ভয়েজার ১-এর থ্রাস্টার জ্বালালেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ভয়েজারের বর্তমান অবস্থান অনুসারে রোববার সকাল ৭টায় ভয়েজারের উদ্দেশ্যে বার্তা পাঠালে তা ভয়েজার ১-এর কাছে পৌঁছায় সোমবার ভোর সাড়ে ৪টায়। সেখান থেকে বার্তা আসতেও সময় লাগে একই। ফলে ভয়েজার ১-কে কোনও নির্দেশ দিলে কাজটি ঠিকমতো হয়েছে কি না বুঝতে সময় লাগে দেড় দিনেরও বেশি। ভয়েজারকে পৃথিবীতে ফেরত আনার জন্য পাঠাননি বিজ্ঞানীরা, ফলে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে এই সময়ের ব্যবধান।
২০১৩ সালে সৌরজগতের সীমা অতিক্রম করে ভয়েজার-১। তবে সম্প্রতি ক্রমশ পৃথিবীর সঙ্গে কৌনিক দূরত্ব বাড়ছিল ভয়েজারের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টেনার। দ্রুত তার অভিমুখ পরিবর্তন না করলে পৃথিবীর নজর থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারত মহাকাশযানটি। সেই কাজটিই গত মঙ্গলবার করেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
ভয়েজারের গতি পরিবর্তনের জন্য নির্দিষ্ট জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় কক্ষ পরিবর্তনের থ্রাস্টারগুলো জ্বালিয়ে কাজ হাসিল করেছেন গবেষকরা। মঙ্গলবার থ্রাস্টারগুলো জ্বালানো হলেও সেটি ঠিকমতো কাজ করছে তা নিশ্চিত হওয়া যায় বুধবার।
জানা যায় ঠিকঠাক কাজ করেছে ৪টি থ্রাস্টারই। ৩৭ বছর মহাকাশের জমাট ঠাণ্ডায় থ্রাস্টারগুলো আবার চালু করতে পারাকে নাসার প্রযুক্তিগত সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ