নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি বলছে, ২০১৬ সালে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) থেকে ডিজিটাইজ জন্মনিবন্ধন সেবা নিয়েছেন সবচেয়ে বেশি গ্রহীতা, যার হার ৭১.৮ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে কম সেবা গ্রহীতা রয়েছেন বিভিন্ন তথ্যসেবা ক্ষেত্রে, যার হাত ০.৪ শতাংশ।
রবিবার রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবি’র ‘নাগরিক সেবায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার: ভূমিকা, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এছাড়া ইউডিসি’র মাধ্যমে দেয়া অন্য সেবাগুলোর মধ্যে সনদ কম্পোজ-প্রিন্ট ০.৭%, ছবি তোলা-প্রিন্ট ৭.২%, ফটোকপি-লেমেনেটিং ৪.৮%, অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদনপত্র পূরণ ও প্রিন্ট ০.৭% এবং জমির পর্চার জন্য অনলাইনে আবেদন ০.৫% ভাগ সেবা নিয়েছেন গ্রহীতারা।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, উদ্যোক্তাদের সক্ষমতার ভিন্নতা ও স্থানীয়ভাবে সব সেবার চাহিদা একরকম না হওয়ায় সব ইউডিসিতে সবধরনের সেবা একইভাবে সহজলভ্য নয়। এলাকাভেদে সেবার চাহিদা ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে এবং উদ্যোক্তার সক্ষমতার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক সেবা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।
ভূমি ব্যবস্থাপনার ডিজিটাইজ করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ভূমি ব্যবস্থাপনার ডিজিটাইজ করার কাজ কয়েক বছর আগে শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট অনেকের অনীহার কারণে তা পুরোপুরি ডিজিটাইজ সম্ভব হয়নি। তবে এটা সত্য যে, ভূমি ব্যবস্থাপনায় পুরোপুরি ডিজিটাইজ করা সম্ভব হলে এ খাতে দুর্নীতির সুযোগ কমে যাবে।’
জমির পর্চার ডিজিটাইজ প্রসঙ্গে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে বেশ কয়েকটি সেবার মধ্যে একটি হলো জমির পর্চার জন্য অনলাইনে আবেদন করা। জরিপভুক্ত ইউডিসিগুলোতে জমির পর্চার জন্য আবেদন করেছেন মাত্র এক শতাংশ। তবে ইউডিসিতে এ সেবা নিতে গিয়ে কোনো ধরনের আর্থিক দুর্নীতির শিকার হননি সেবা গ্রহীতারা। কিন্তু জমির পর্চা উত্তোলন সেবা সব ইউডিসি থেকে নেয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে জানা গেছে, এখনো সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন সম্পূর্ণ ডিজিটাইজড করা হয়নি।’
ইফতেখার বলেন, ‘এ খাতটি পুরো ডিজিটাইজ না হওয়ার কারণ হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা এ খাতটি পুরোপুরি ডিজিটাল হোক তা চান না। কারণ, পুরোপুরি ডিজিটাল হয়ে গেলে এ খাতে দুর্নীতি অনেক কমে আসবে। ফলে এসব কর্মকর্তা বা কর্মচারীর অর্থ উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।’
ডিজিটাইজ পদ্ধতিতে তৃণমূল পর্যায়ে নাগরিক সেবা সহজলভ্য করা এবং সেবাদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করতে ২০০৯ সালে ইউনিয়ন অ্যান্ড সার্ভিস সেন্টার (ইউআইএসসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়। যা পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) নামকরণ করা হয়।
টিআইবি’র সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা উপস্থাপন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুলিয়েট রোজেটি।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ