মো: গোলাম আযম সরকার:
বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর আওতাধীন উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লি: এর কর্মচারীরা ৪৪ বছর থেকে অবহেলিত। তাঁরা সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। একদিকে তাঁদের প্রতিনিধি করে ফেডারেশন অন্য দিকে বি আর ডিবি। তারা দুটানার মধ্যে জীবন অতিবাহিত করছেন। ৪০ বছর একই পদে চাকুরি করে কোন প্রমেশন পায়নি। পেনশন গ্রাচুয়িটি থেকে বঞ্চিত। ৪০ বছর চাকুরি করে, চাকুরি শেষে খালি হাত পা নিয়ে বিধাদ দিয়েছে। তাঁর আজ আতœনাতের সাথে জীবন যাপন করছেন। সরকারের বিভিন্ন সময় পলÍী উন্নয়নের বোর্ড মিটিং-এ বিভিন্ন সময়ে রাজস্ব ভুক্ত করন করার কথা থাকলে অদ্যবধি পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
স্বাধীনতার’পর দ্বিস্তর সমবায় আন্দোলনকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে কৃষি উৎপাদন, বিশেষ করে দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণের লক্ষো জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান ৭২’এর সংবিধানের ১৩নং অনুচ্ছেদে সমবায়কে মালিকানার স্বীকৃতি প্রদান করেন। তৎপ্রেক্ষিতে ১৯৭৩ সালের ২৮শে আগষ্ট সমবায়ী কৃষকের নিয়ে তিন দিনের আবাসিক সম্মেলনের মাধ্যমে “বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন ” গঠন করেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গঠিত ১৯৭৩ সালের টি,সি,সি এ’র আদলে বর্তমানে ইউসিসিএ কে সাজানোর দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা। বর্তমানে সেই “বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর আওতাধীন ইউসিসিএ কর্মচারিদের মানবেতর জীবন যাপন” । কর্মচারির বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন একটি অভিজ্ঞ উপকমিটির মাধ্যমে “ইউসিসিএ কর্মচারি চাকুরী বিধি-২০১৫” নামে যে চাকুরি বিধি প্রণয়ন করেন, তা বাস্তবায়নের দাবি জানান। তারাও আরোও বলেন, মাননীয় মহাপরিচালক মহোদয় স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের সুষ্পট নির্দেশন অধিকাংশ ইউসিসিএতে স্কেল বাস্তবায়নের সংগতি থাকা স্বত্বেও উপ-পরিচালকের দোহাই দিয়ে তাহা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না যাহা অনভিপ্রেত ও দৃু:খ জনক। ইউসিসিএ লি: এর বেতন নির্ধারণ (ফিক্রশন) ম্যানেজিং কমিটির এখতিয়ার ভূক্ত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পরিহার করে কর্মচারিদের বেতন স্কেলে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী জানান।
কর্মচারীরা আরোও জানান, ইউসিসিএ কর্মচারিদের আন্দোলন ও দাবীব প্রেক্ষিতে বিআরডিবি’র ৪৪ তম বোর্ড সভায় মহাপরিচালক মহোদয়কে সভাপতি করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করে দেন। উক্ত কমিটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ইউসিসিএ কর্মচারীদের রাজস্ব বাজেটের অন্তর্ভূক্তির জন্য সুপারিশ করেন। উক্ত সুপারিশের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের সভাপতিত্বে গত ১১.০৪.২০১২ ইং খ্রি: এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যতদিন পর্যন্ত ইউসিসিএ কর্মচারিদের রাজস্ব বাজেটে স্থানন্তর করা না যায় ততদিন পর্যন্ত ইউসিসিএ’র কার্যক্রম গতিশীল ও সম্প্রসারনের প্রয়োজনে তাদের বেতন-ভাতা ৭০% স্যালারী সাপোর্ট প্রদানের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। সে আলোকে ২০১৩,২০১৪,২০১৫,২০১৬,২০১৭ অর্থ বছরে ৭৫ কোটি টাকা স্যালারী সাপোর্ট প্রদান করা হয়। চলমান ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে স্যালারী সাপোর্ট বরাদ্দ হয়নি।
এদিকে বিগত বছর গুলোতে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলে কর্মচারিদের হাতে সঠিকভাবে যাচ্চে না। যদিও কিছু যাচ্ছে সেই ক্ষেত্রে শর্তজুড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁরা জানান। তবে এ কর্মচারিদের বেতন ভাতার একটি বড় অংশ আসে ৭% ঋণের সেবা চার্জ থেকে ।
কর্মচারিরা আরোও জানান, দেশগঠনের পরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দারিদ্র ক্ষুদ্রা মুক্ত দেশ গঠনের লক্ষে গ্রাম পর্যায় কৃষক সমবায় সমিতি গঠন করেন। সেই সমিতি গুলো কমপক্ষে ২০ জন কৃষকে সদস্য ভুক্ত করাহয়। এটি পরিচালনা করা হয় উপজেলা পর্যায় কেন্দ্রীয় সসমবায় সমিতি লি: থেকে। সেই সময়ে কৃষকদের ভাগ্যউন্নয়নের জন্য স্যালোমেশিন,গভীর ডিপটিউবয়েল স্থাপন করা হয়। এবং বিনা সুদে সার বিতরন করা হয়। ফসলি ঋন দেওয়া হয়। যা আজ বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু কর্মূচারিদের ভাগ্যর উন্নয়ন আজো হয়নি। যা একেবারেই অমানবিক। কর্মচারিরা আর্জ মানবতার জীবনযাপন করছেন। এছাড়াও কর্মচারিদের কোন প্রমেশনের ব্যবস্থা নেই। নেই কোন বেতন ব্যবস্থার সু-ব্যবস্থা। ঝড়-বৃষ্টি ক্ষরা মাথায় নিয়ে কর্মচারিরা দিন রাত কাজ করেন। কিন্তু মাসশেষে খালি হাতে বাসায় ফেরতে হয়। ইউসিসিএ কর্মচারি দ্বারা বিআরডিবি এর বিভিন প্রকল্প সচল করে রাখা হচ্ছে। কিন্তু দিন দিন ইউসিসিকে ও কর্মচারিদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে সামান্য পরিমাণ বরাদ্দ এলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একে বারেই কম। তা আবার বিআরডিবি কতৃপক্ষ ব্যাংক এফডিআর করে রাখছেন, সরকার ঘোষিত জাতীয় বেতন স্কেল দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এবং কোথাও কোথাও করা হলেও বাড়ি ভাড়া ৫০% প্রদান করা হচ্ছে। যা একেবারেই অমানবিক। দেশ গঠনে ইউসিসির কর্মচারি গণ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের আজ একটাই দাবী জাতীয় করনে ।
সর্বশেষ বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড পল্লী ভবন ৫, কাওরান বাজার ,ঢাকা-১২১৫। প্রকাশনায় বিআরডিবি’র আওতাধীন উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় লি: এর কর্মচারীদের চাকুরী মডেল প্রবিধানমালা,২০১৭ এ বলা হয়েছে,
প্রথম অধ্যায় : ১) সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগ: ক) এই চাকুরি প্রবিধি বিআরডিবি ইউসিসিএ লি: এর কর্মচারীদের চাকুরি প্রবিধি ২০১৭ নামে অভিহিত হইবে। খ) এই প্রবিধি বিআরডিবি ইউসিসিএ লি: এর সকল সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা, কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে। তবে সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হইতে প্রেষণে নিয়োজিত চুক্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীগণের ক্ষেত্রে বিধানাবলীর কোন কিছুই হইবে না।
সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, গ্রাম/পাড়া পর্যায়ের নিবন্ধিত ন্যূনতম ১০টি প্রাথমিক সমবায় সমিতির সমন্বয়ে উপজেলা/থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি গঠিত হইবে। বিআরডিবি’র কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মতে গ্রাম/পাড়া পর্যায়ের কৃষক,বিত্তহীন পুরুষ,বিত্তহীন মহিলা সমবায় সমিতিগুলি উপজেলা/থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সদস্য হইবে। গ) বিআরডিবি-ইউসিসিএ বলিতে বিআরডিবি কর্তৃক সৃজিত, পরিচালিত,সমর্থিত এবং বিআরডিবি’র মাধ্যমে বস্তগত,সম্পত্তিগত বা আর্থিক সহায়তা প্রাপ্ত এবং বিআরডিবি এর আইনে বর্ণিত ইউসিসিএসসমূহকে বুঝাইবে।
দৈনিক দেশজনতা /এন আর