নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা মহানগরীর বায়ু দূষণরোধে পার্ক, লেক, জলাধার সংরক্ষণ ও বৃক্ষ নিধন বন্ধ, অত্যাধুনিক ইট প্রস্তুতের লক্ষ্যে নির্ধারিত মান মাত্রায় সালফারযুক্ত কয়লা আমদানি, পেট্রোল ও ডিজেল চালিত যানবাহন নিয়মিত পরীক্ষা ও সংরক্ষণ, খননকৃত রাস্তা-ঘাট দ্রুত মেরামতসহ স্তূপকৃত মাটি সরিয়ে ফেলা, ভবন নির্মাণের সামগ্রী রাস্তার পাশে ফেলে না রাখাসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)।
গতকাল শনিবার পবা মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরীর বায়ু দূষণরোধে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য জরুরি করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান। এতে বক্তব্য রাখেন নাসফের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, পবার কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ, মো. সেলিম, জাহাঙ্গীর যুবরাজ, মোস্তারী বেগম, জেবুন নেসা, এলিজা রহমান, এডভোকেট নাজনীন রহমান বেবী, নাসফের প্রকৌশলী কামাল পাশা, ইয়ুথ সানের সভাপতি মাকিবুল হাসান বাপ্পী প্রমুখ।
প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, বাংলাদেশে আমদানিকৃত কয়লা অত্যন্ত নিম্নমানের (সালফারের পরিমাণ নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম পক্ষে ৫ গুণ বেশি) এবং এসব কয়লা ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। আমদানিকৃত পেট্রোল এবং ডিজেলও অত্যন্ত নিম্নমানের। উন্নয়ন কাজে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না। কাজ ধীরগতিতে এগোয়, এর প্রভাবে বায়ু দূষণও বাড়ে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত অনুসারে গত ২২ নভেম্বর ঢাকার বায়ুমান সূচক ছিল ২৬৯। পরিবেশ অধিদপ্তরের মান অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান খুবই অস্বাস্থ্যকর যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বায়ু দূষণের বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরকে দিল্লীর মতো ধোঁয়াশাজনিত দূষণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং ২০১৩ সনের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী বায়ু দূষণরোধের মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের উপর ন্যস্ত। বায়ু দূষণরোধে অধিদপ্তর আইন দুটি এনফোর্স করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
অন্য বক্তারা বলেন, শীত আসলেই ঢাকা মহানগরীতে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। মহানগরীর বায়ু দূষণের প্রধান উৎস ঢাকার চারপাশের শত শত ইট ভাটার কালো ধোঁয়া ও ধূলা, যানবাহন ও কল-কারখানার কালো ধোঁয়া এবং নির্মাণ কাজ, সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের রাস্তা খোঁড়া-খুঁড়ি, মেগা প্রকল্পের কাজ, মাটি ও বালি আচ্ছাদনহীন অবস্থায় পরিবহণ, ড্রেন পরিষ্কার করে রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা, দোকানপাট ও গৃহস্থালির আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলে রাখা, ভাঙাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলাচল, মাটি ও বালুসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী দীর্ঘদিন রাস্তা ও ফুটপাতে ফেলে রাখা, পুরাতন ভবন ভাঙা এবং মেশিনে ইট ভাঙার ধূলা।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি