নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি বলছে, দেশের স্বর্ণ খাতে আমদানি ও দেশীয় বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নেই। সেই সঙ্গে এ পুরো প্রক্রিয়ায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলেও বলছে সংস্থাটি। এ বছরের মে মাসে বাংলাদেশে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ছেলের বিরুদ্ধে দু’জন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হবার পর, ওই ব্যবসায়ীর বিভিন্ন শোরুমে অভিযান চালায় শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ। এরপরই বাংলাদেশে স্বর্ণ আমদানি, দেশীয় বাজারে চাহিদা, সরবারহ এবং দামের সামঞ্জস্য- আর সেইসাথে এসব ক্ষেত্রে কতটা স্বচ্ছতা রয়েছে, তা নিয়ে প্রথম প্রশ্ন ওঠে।
এনিয়ে আজ ঢাকায় একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করবে টিআইবি। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, গবেষণায় তারা দেখেছেন, সার্বিকভাবে স্বর্ণখাতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এ বিষয়ে কোনো পূর্ণাঙ্গ নীতিমালাও নেই। স্বর্ণালঙ্কারের বাজার ব্যবসায়ীদের হাতে নিয়ন্ত্রিত, যাদের একংশ চোরাকারবারি ও কালোবাজারিতে লিপ্ত রয়েছে বলে টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, স্বর্ণ চোরাচালান ও কালোবাজারি সংশ্লিষ্ট কিছু আইনি বিধান রয়েছে তবে এ নিয়ে কোনো সমন্বিত আইন নেই। যেটা আছে তারও প্রয়োগের বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেছেন, গবেষণায় টিআইবি দেখেছে, সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কর্মকর্তাদের একাংশের সাথে চোরাচালানকারী ও ব্যবসায়ীদের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে এই খাতটি বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় হলেও টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে না। সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সেই সঙ্গে ভোক্তা,স্বর্ণশিল্পী ও শ্রমিকদের অধিকার হরণ হচ্ছে। শুল্ক গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী অর্থ পাচার,মাদকদ্রব্য পাচার,অবৈধ অস্ত্র পাচারের সাথে স্বর্ণ চোরাচালানকারীরাও জড়িত। টিআইবি এ বিষয়ে একটি নীতিমালা সরকারের কাছে প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে স্বচ্ছতা,জবাবদিহিতা ও পূর্ণাঙ্গ আইনি কাঠামোর অধীনে স্বর্ণখাতকে আনার প্রস্তাব রয়েছে।
স্বর্ণ আমদানিতে ও মান যাচাই নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে বছরে ৪০ মেট্রিক টন স্বর্ণের চাহিদা রয়েছে, যার প্রায় ৩৬ মেট্রিক টনই আমদানি করতে হয়। এ খাতে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক এখানে কাজ করে।
সূত্র: বিবিসি
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ