নিজস্ব প্রতিবেদক:
পঞ্চগড়ে কমলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাসাবাড়ি ও স্বল্প পরিসরে ছোট ছোট বাগানে আশানুরূপ কমলার ফলন আসায় কৃষকরাও খুশি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পঞ্চগড়ের উৎপাদিত কমলার স্বাদ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের কমলার মতো। স্থানীয় কৃষি বিভাগের কারিগরি সহায়তায় জেলায় কমলা চাষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে। বাজারে চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেকে কমলার বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছেন। এসব বাগানে উৎপাদিত কমলার আকার, রং ও স্বাদ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার কমলার মতো।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা, সাতমেরা ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কমলার বাগান করে লাভবান হয়েছেন। কৃষকদের বাগানে কমলার ফলন ভালো হওয়ায় এসব এলাকায় অনেকে কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
কমলা বাগান মালিক আবুল কাশেম রাজু প্রধান জানান, ২০১০ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কমলার চারা নিয়ে ৪ একর জমিতে কমলার বাগান শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালে ২ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে কমলা আরো বেশি বিক্রি করি। ২০১৭ সালে আমি প্রায় ৩ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করবো বলে আশাবাদী।
আরেক কমলার বাগান মালিক হাবিবুন নবী বলেন, ২০০৯ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ১৫৬টি কমলার চারা নিয়ে বাগান শুরু করি। বর্তমানে আমার বাগানে ৯০০ কমলার গাছ হয়েছে। প্রতিবছর আমার কমলার বাগান বৃদ্ধি পাচ্ছে। কমলা বাড়ি থেকে পাইকাররা নিয়ে যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে আমরা আরো লাভবান হবো।
কমলার বাগান মালিক শেফালি বেগম জানান, ৬ বিঘা জমিতে কমলার চাষ করেন। কমলার চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। তিনি বলেন, তার উৎপাদিত কমলা দার্জিলিং এর কমলাকে হার মানিয়েছে। কমলার পাইকার শহীদুল হক জানান, তিনি স্থানীয়ভাবে কমলা কিনে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন বাজারে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন। কমলা ক্রেতা ও দর্শনার্থী অজয় দত্ত অপু জানান, পঞ্চগড়ের উৎপাদিত কমলা কিনে তিনি ঢাকায় বিভিন্ন আত্মীয়দের বাসায় পাঠাবেন।
জানা গেছে, জেলার মাটিতে অম্লত্ব (পিএইচ) ও আবহাওয়া কমলা চাষের উপযোগী। এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ২০০৭ সালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কমলা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। কমলা আমদানি হ্রাস, আবাদ বৃদ্ধি, পুষ্টি চাহিদা মেটানো ও কৃষকদের বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন (রুপু) জানান, জেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে কমলা চাষ করা হয়েছে। এ থেকে প্রায় ৩২০ মেট্রিকটন কমলা উৎপাদিত হবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ