নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে চামড়া কারখানাগুলো সরিয়ে নেয়ায় নদী দূষণ পরিস্থিতি পাল্টায়নি বলে মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয় বুড়িগঙ্গার বদলে ট্যানারিগুলো (চামড়া কারখানা) দূষণ করছে এখন ধলেশ্বরী নদী। এই পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ওই বৈঠক থেকে। আজ বুধবার সচিবালয়ে নদী রক্ষা ও দখলমুক্ত টাস্কফোর্স কমিটির ৩৬তম সভা শেষে আলোচনার বিষয়বস্তু গণমাধ্যমকর্মীদের জানান নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলেন, ‘সাভারের ট্যানারি থেকে যেন নদী দূষণ না হতে পারে প্রয়োজনে সেখানে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে। কাজটি করবে শিল্প মন্ত্রণালয়। আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি বলেছি।’
পাকিস্তান আমলে হাজারীবাগে বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে উঠা ট্যানারিগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও কারখানার অশোধিক বর্জ্য ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গাকে পুরোপুরি দূষিত করে ফেলেছে। দূষণ গিয়ে ঠেকেছে শীতলক্ষ্যাতেও। এই অবস্থায় হাজারীবাগ থেকে কারখানাগুলো সাভারে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। সেখানে বর্জ্য পরিশোধনে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা (সিইটিপি) রাখা হয়েছে। বারবার সময়ক্ষেপণের পর অবশেষে কারখানাগুলোর একাংশ পুরোপুরি চামড়া শিল্পনগরীতে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকিগুলো প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে। আর হাজারীবাগের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বুড়িগঙ্গার দূষণ পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সাভারে চামড়া শিল্প নগরীর পাশে ধলেশ্বরীতে দূষণ ছড়াচ্ছে সেখানকার কারখানা থেকে ফেলা অশোধিত বর্জ্য। এই পরিস্থিতিতে ধলেশ্বরী আরেক বুড়িগঙ্গা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে ধরেছেন পরিবেশবাদীরা।
মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এই বিষয়টি ছাড়াও শিল্প কারখানার বর্জ্য পরিশোধনে করা ইটিপি চালু না রেখে বন্ধ রাখার বিষয়টিতেও উদ্বেগ জানানো হয়। নৌমন্ত্রী বলেন, ‘নদীর তীরে গড়ে ওঠা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইটিপি থাকলেও তারা চালু রাখে না। পরিবেশের লোক গেলে তারা চালু করে। লোকজন চলে গেলে ফের বন্ধ করে দেয়। এতে অনেক নদী দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ ‘জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান নদী দূষণ করছে তাদের তালিকা পাঠাতে, তালিকা পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি