২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৯:৫০

ইরানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৪৫০, আহত ৭,০০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরানের গত এক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৪৫০ জন মারা গেছেন। রবিবার ইরাক-ইরান সীমান্তে ঘটে যাওয়া ৭.৩ উচ্চমাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার একদিন পেরিয়ে গেলেও হতাহতের সংখ্যা প্রতি মুহুর্তে বাড়তেই আছে। রয়টার্সের খবর।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল জানায়, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫০ তে এসে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়ছেন আরও ৭ হাজার জন। এখনো অনেক লোক নিখোঁজ রয়েছে। অনুসন্ধানী দল উদ্ধার এখনো তৎপড়তা চালিয়ে যাচ্ছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দি অধ্যুষিত সুলায়মানিয়ায়। গভীরতা ছিল ৩৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার। মূল আঘাতের পর ৪ দশমিক মাত্রার ভূমিকম্পের কথা জানিয়েছে মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাটি।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরমানশাহর পাহাড়ি এলাকায় বাড়িঘর ধসে ও পাহাড়ধসে আটকে পড়ে আছে অনেক মানুষ। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, সেখানে এখনো উদ্ধার তৎপড়তা চলছে, যার কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

ইরাক সীমান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার (১০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশটির সরপোল-ই-যাহাব শহরে ৩০০ এরও বেশি মানুষ নিহত হন। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল জানায়, মাটির ঘরের কারণে কিছু গ্রাম অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা কর্মীরা জানাচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অতিদ্রুত কম্বল, শিশুদের জামা, ওষুধ এবং পানির বড় পাত্রের প্রয়োজন। বিশেষ করে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে চিন্তিত গৃহহীন মানুষগুলো।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন যে, অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকারী দল প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। সেনাবাহিনীকেও দুর্গত এলাকায় কাজ করতে বলা হয়েছে। তবে ভূমিকম্পের ফলে ভূমিধস সৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

এদিকে ইরাকি আবহাওয়া অফিসের একজন কর্মকর্তা জানায়, সেখানে ৬.৫ মাত্রায় ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে। ইরানের সাথে সীমান্তবর্তী কুর্দিস্তান অঞ্চলে সুলেইমানিয়াহ প্রদেশে আঘাত হানে ভূ-কম্পটি।

কুর্দি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ইরাকে কমপক্ষে তের জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪ শতেরও অধিক। তারমধ্যে উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলেই নিহত হয়েছেন সাতজন। কুর্দিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রী রেখাওয়াত হামা রশিদ রয়টার্সকে বলেন, সেখানের পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক। তিনি বলেন, সেখানকার প্রধান হাসপাতাল দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে গেছে ও বাড়িঘর স্থাপনা। দক্ষিণ বাগদাদেও মারাত্মকভাবে আঘাত হানায় সেখানকার অধিবাসীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে তাৎক্ষনাত ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেন, আহত শত শত মানুষকে অন্যান্য প্রদেশে স্থানান্তর করা হয়েছে। কেরমানশাহ প্রদেশের  হাসপাতাল পুরোপুরি ধসে পড়ায় তাদের চিকিৎসা প্রদান ব্যহত হচ্ছিল।

ইরানি সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সোমবার এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি তার সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি সব সরকারি সংস্থাকে উদ্ধার তৎপড়তার কাজে সাহায্য করার জন্য আহবান জানান। এদিকে ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় দেশটিতে মঙ্গলবার এক দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া কারমানশাহ প্রদেশে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :নভেম্বর ১৪, ২০১৭ ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ