নিজস্ব প্রতিনিধি:
নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. শওকত চৌধুরীর জামিনের বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও তিন সপ্তাহ বাড়িয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে তাকে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা দুই মামলায় ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা না দিলে তার জামিন বাতিল হবে বলে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
মো. শওকত চৌধুরীর পক্ষে করা সময় আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে শওকতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
পরে আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা হাইকোর্টের আদেশের কপি এখনও হাতে পাইনি। এ জন্য সময় আবেদন করেছি। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। আগামী ৩ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টের আদেশ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগ। গত ২২ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা না দিলে এমপি শওকতের জামিন বাতিল হবে বলে রায় দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৮ ও ১০ মে শওকত চৌধুরীসহ ওই ব্যাংকের ৯ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় দুটি মামলা করে দুদক। অন্য আসামিরা হলেন- কমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বংশাল শাখার প্রাক্তন শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গনি, চাকরিচ্যুত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার শিরিন নিজামী, প্রাক্তন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সফিকুল ইসলাম, প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট পানু রঞ্জন দাস, প্রাক্তন ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইখতেখার হোসেন, প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার দেবাশীষ বাউল, প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আসজাদুর রহমান।
এরপর আগস্ট মাসে শওকত চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে নিম্ন আদালতও তার জামিন মঞ্জুর করেন।
অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে ২০১৬ সালের ৮ মে ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ এবং ১০ মে ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সংসদ সদস্য শওকতসহ ৯ জনের নামে দুটি মামলা করে দুদক। ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৭টি এলসি খুলে মেসার্স যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মেসার্স এগ্রো কেমিক্যাল লিমিটেড ও উদয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজসে তিনি এ ঋণ জালিয়াতি করেন। পরে যা সুদে আসলে শত কোটি টাকার ওপরে চলে যায়।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ