লাইফ স্টাইল ডেস্ক:
পুরোপুরি জাঁকিয়ে শীত না পড়লেও, সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হলে গায়ে হিম হিম বাতাসের ঝাপটা জানিয়ে দেয় শীত চলে এসেছে। শীতকাল আসার সাথে সাথেই দেখা দিতে শুরু করে চুল ও ত্বকের নানান রকম সমস্যা। সম্ভবত পায়ের ত্বকের সমস্যাটিই দেখা দেয় সবচাইতে বেশী। আবহাওয়ার এই তারতম্যের ফলে ত্বক কখনো ঠাণ্ডা অথবা গরম থাকে। পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার মানে হলো, ত্বকের রক্ত প্রবাহ কমে গিয়েছে শরীরের উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য।”
এই সকল কারণে, শীতের সময়ে পায়ের ত্বকে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়া শুরু করে। খুব বেশী টাইট মোজা কিংবা জুতা পায়ের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধা দান করে থাকে বলে, সবসময় এমন কিছু পরে থাকা অনুচিত। বরং, ঘরে বসে খুব অল্প সময়ে ও কম পরিশ্রমেই সহজে পায়ের যত্ন নেওয়া সম্ভব। এমন কিছু সহজ উপায়ে পায়ের যত্ন নেওয়ার টিপস জেনে নিন।
১.পায়ের নখে অনেক বেশীদিন যাবত পুরনো নেইলপলিশ রেখে দেওয়া যাবে না। নেইলপলিশ ব্যবহারের পরের দিন নেইলপলিশ তুলে ফেলা সবচাইতে ভালো। পায়ের নখে অনেকদিন যাবত একই নেইলপলিশ রেখে দেওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাল হাইবারনেশন তৈরি হয় নেইলপলিশের নীচে। যা নখের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর।
২.পায়ের নখ ছোট বা বড় যেমনই থাকুক না কেন, নখের নীচে ভালোভাবে পরিষ্কার করা খুবই জরুরি। কারণ পায়ের নখে নীচে প্রতিদিনের ময়লা, ধুলাবালি ও মরা চামড়া একসাথে জমে থাকে। পানের নখ পরিষ্কার করার সবচাইতে কার্যকরি উপায় হলো- ব্যবহৃত পুরনো দাঁত মাজার ব্রাশ ব্যবহার করা। প্রতিদিনের গোসল শেষে টুথব্রাশে অল্প পরিমাণে সাবান কিংবা বডি শাওয়ার লাগিয়ে ভেতর থেকে বাইরের দিকে টেনে টেনে ব্রাশ করলে পানের নখ একদম পরিষ্কার হয়ে যাবে।
৩.পায়ের নখ ভেঙ্গে গেছে? কিংবা পায়ের নখ খুব দ্রুত ভেঙ্গে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন? তবে পায়ের নখের জন্য ব্যবহার করতে হবে এসেনশিয়াল অয়েল অথবা টি ট্রি অয়েল। যা নখ মজবুত করতে এবং নখের ভেতরের ফাংগাল কোন সমস্যা সারিয়ে তুলতে খুব ভালো কাজ করে থাকে।
৪. ফ্যাশন সচেতন সকলেই নিত্যনতুন স্টাইলের জুতা পড়তে পছন্দ করবেন। কিন্তু শীতের সময়ে এমন কোন জুতা ব্যবহার করা উচিৎ নয়, যেটা পরিধান করলে পায়ের আঙ্গুলগুলো স্বাধীনভাবে নাড়াচাড়া করা সম্ভব হয় না। তাই শীতকালে জুতা কেনার সময়ে এমন জুতা কেনা উচিৎ, যেটার সামনের অংশ একেবারেই খালি। অথবা যে জুতা পায়ে দিলে আঙ্গুল ঢাকা থাকলেও, সেগুলো খুব স্বাভাবিকভাবে নাড়াচাড়া করা যায়।
৫. শীতের সময় বেশীরভাগ মানুষের যে সমস্যাটি দেখা দেয় সেটা হলো- পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া। অনেকের পা এতো বেশী ঠাণ্ডা হয়ে যায় যে অনেকটা অবশভাব চলে আসে! পায়ের এই অতিরিক্ত ঠাণ্ডাভাব থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য ভালো কোন ফুটক্রিম অথবা ভ্যাসলিন পায়ের আঙ্গুল থেকে উপরের দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে দুই হাত দিয়ে। এইভাবে ১০-১৫ মিনিট ম্যাসাজ করার পরে পায়ের ঠাণ্ডাভাব কেটে গিয়ে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরে আসবে। শুধু যে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ফিরে আসবে তাই নয়, একইসাথে পায়ের ত্বক তার প্রয়োজনীয় ময়েশ্চার পাবে। ফলে পা কোমল থাকবে।
৬. নিশ্চয় সকলেই অবাক হচ্ছেন, শীতের সময়ে পায়ের সবচাইতে সাধারণ সমস্যাটি নিয়ে এখনও কোন কথাই বলা হলো না কেন! শীতকালে পায়ের সবচাইতে প্রচলিত এবং সাধারণ সমস্যাটি হলো- পায়ের ত্বক শুকিয়ে যাওয়া। অন্য কোন ক্রিম, ভ্যাসলিন কিংবা তেল নয়, এক্ষেত্রে সবচাইতে কার্যকরি হলো অলিভ অয়েল। যাদের পায়ের ত্বক অনেক বেশী শুষ্ক হয়ে যায় শীতের প্রাদুর্ভাবে, সকলের জন্যে অলিভ অয়েল সবচাইতে ভালো উপাদান।
৭. শীতকালে পায়ের শুষ্ক ত্বকের পাশাপাশি অন্য যে সাধারণ ও প্রচলিত সমস্যাটি দেখা যায় সেটা হলো- পায়ের আঙ্গুল অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া। যা থেকে পায়ের চুলকানি মূলক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য সবচাইতে সহজ ঘরোয়া সমাধান হলো, কুসুম গরম পানিতে সাদা ভিনেগার অথবা অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে ১০ মিনিটের জন্য মিশ্রণের মাঝে পা ডুবিয়ে রাখা। এই কাজটি পায়ের নানান ধরণের সমস্যার ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ করে থাকে। তবে মনে রাখতে হবে, পায়ে যদি কোন কাটা-ছেঁড়া থাকে অথবা ডায়বেটিসের সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে এটা কোন কাজে দেবে না।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ