নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিচার বিভাগের যে সামান্য স্বাধীনতা ছিল তাও সরকার নস্যাৎ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩য় তলার কনফারেন্স লাউঞ্জে শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সভাটির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘আজকে দেশের প্রধান বিচারপতি নাকি পদত্যাগ করেছেন! যা বিচার বিভাগ ও আদালতের স্বাধীনতার জন্য কলঙ্কের দিন। তাকে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছে। বিচার বিভাগের যে সামান্য স্বাধীনতা ছিল, এই সরকার তাও নস্যাৎ করে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায় সরকারের বিপক্ষে গেছে বলেই এ ঘটনা ঘটল। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এসব করল। অথচ সরকার রিভিউ আবেদন করতে পারতো। তারা সমন্বিতভাবে সিনহাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে এই প্রতিষ্ঠানেরই ক্ষতি করল। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ঐতিহ্য নিয়ে আমরা যে গর্ববোধ করতাম, তা আর থাকল না। এস কে সিনহার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সরকারের কোনো লাভ হলো কি না জানি না, তবে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। বিচার বিভাগের মান আমরা উদ্ধার করতে পারব কি না সন্দেহ আছে।’
বিচার বিভাগকে সরকার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে দাবি করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া লন্ডনে একান্ত ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হলো। কিন্তু দেশে ফিরে তিনি আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। এরপর স্থায়ী জামিন চাওয়া হলে তা বাতিল করে দেওয়া হলো। দিলেন সাপ্তাহিক জামিন। বিষয়টি কেমন হলো? আমি ৫০ বছর ধরে আইন পেশায়, এ ধরনের ঘটনা এর আগে শুনিনি। এটা করে নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। প্রমাণিত হয় যে, আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলছে। সাপ্তাহিক জামিন দেয়ার বিষয়টি অশোভনীয় আচরণ। আসলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই বলেই এমনটি হচ্ছে।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। এটা ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে সুষ্ঠু ভোট বা নির্বাচন হবে না। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলেও এ সময় দাবি করেন তিনি।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারির সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ