স্বাস্থ্য ডেস্ক:
শিশুর পেটে কৃমি নিয়ে খুব কম মা, বাবাই আছে যারা সতর্ক থাকেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না এটা নিয়ে হেলাফেলা করা মটেও ঠিক না। শিশুরা বিভিন্ন সময় পেটের ব্যথায় আক্রান্ত হয়। খাদ্যে অরুচি, পাতলা পায়খানা, বমি বমি ভাব, পায়খানার রাস্তায় চুলকানি ইত্যাদি সমস্যাগুলো প্রায়ই শিশুদের মাঝে দেখা যায়। এগুলো কৃমির কারণে হয়ে থাকে। যা পরবর্তিতে শিশুর অনেক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।.
সংক্রমণের কারণ:
অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবস্থা,
অপরিষ্কার ঘরবাড়ি,
দূষিত পানির ব্যবহার,
টয়লেট শেষে ভালোভাবে হাত না ধোয়া,
খাবার তৈরি বা গ্রহণের আগে হাত পরিষ্কার না করা,
হাতের নখ বড় রাখা,
দাঁত দিয়ে নখ কাটা ইত্যাদি।
কৃমির প্রকারভেদ ও স্বাস্থ্য সমস্যা-
বিভিন্ন প্রকার কৃমির মধ্যে গোলকৃমি, ফিতা কৃমি ও গুঁড়া কৃমির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
কখনো কখনো গোলকৃমি শিশুর নাক-মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসে।
এটি শিশুর শ্বাসনালীতেও প্রবেশ করতে পারে।
এছাড়া এটি শিশুর অন্ত্রে বা পিত্তনালীতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
ফিতা কৃমি শিশুর অন্ত্রে লেগে থেকে রক্তপাত ঘটায়।
এতে শিশু ধীরে ধীরে রক্তশূন্য হয়ে পরে।
পায়খানার রাস্তায় চুলকানির জন্য গুঁড়া কৃমি দায়ী।
কৃমি ও অপুষ্টি-
কৃমির কারণে শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়।
কৃমি অন্ত্রে রক্তপাত ঘটিয়ে একদিকে শিশুকে রক্তশূন্য করে।
অন্ত্রে পুষ্টি উপাদানের পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে ডায়েরিয়া ঘটায়।
এভাবে দীর্ঘ মেয়াদী সংক্রমণের ফলে শিশুর খাদ্যে অরুচি হয় এবং সে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়।
চিকিৎসা-
Albendazole বা Mebendazole অথবা Pyrental pamoate দিয়ে সাধারণত শিশুর কৃমির চিকিৎসা করা হয়। আমাদের দেশে বছরে দুই বার জাতীয় টীকা দিবসে পোলিও টীকার পাশাপাশি এক বছর থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের কৃমি নাশক ওষুধ (Albendazole) খাওয়ানো হয়।
প্রতিরোধ–
গৃহস্থালির কাজে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে হবে।
স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
খাবারের আগে বা টয়লেটের পরে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
শিশুদের হাতের নখ বড় রাখা যাবে না এবং দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
সময়মতো কৃমি নাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
মানুষের অপরিশোধিত মল জমির সার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি