নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের নদ-নদী ও খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় এখানকার নয়টি উপজেলার সৌখিন মাছ শিকারিরা মাছ ধরার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন খাল-বিল ও মুক্ত জলাশয়ের মাছের খোঁজে বের হচ্ছেন। সৌখিন মাছ শিকারিদের একস্থানে সমবেত করতে মহিষের শিংয়ের তৈরি শিংগাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই শিংগায় ফুঁ দিয়ে নিমিষেই শতশত মানুষের উপস্থিত ঘটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাছ ধরতে বের হয় মাছ শিকারিরা।
মাছ ধরার দেশীয় গ্রাম্য যন্ত্র ফিকাজাল, হেঙ্গা, চাকজাল ও ফাঁসিজাল নিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা। যেখানে মিলছে মাছ ধরার উপযোগী স্থান সেখানেই মাছ শিকারের ঐক্যদ্ধ দলগুলো নেমে পড়ছেন। জেলার অন্যান্য উপজেলার মধ্যে ফুলবাড়ীতে নিজেদের তৈরি চাকজাল দিয়ে মাছ ধরার ঐক্যবদ্ধ সৌখিন মাছ শিকারি মানুষের সংখ্যা রয়েছে অনেক। এ উপজেলার প্রায় প্রতিটি পরিবারে রয়েছে মাছ শিকারের চাকজাল। তারা মহিষের শিংয়ের তৈরি শিংগায় ফুঁ দিয়ে শতশত মানুষের উপস্থিতি ঘটিয়ে মাছ শিকারে বের হয়।
এখনাকার মাছ শিকারী কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের হারুন অর রশীদ (৩২) বলেন, চাকজাল দিয়ে মাছ ধরা আমাদের খুব ভালো লাগে। এটা একরকম নেশার মতো। তাই সংসারের কাজ ফেলে রেখেও খাল-বিলে আমরা মাছ ধরতে বের হই। মাছ শিকারি পানিমাছকুটি গ্রামের আব্দুল করিম (৫৫), এরশাদ আলী (৫৬) জানান, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে তারা বিভিন্ন প্রান্তরে মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরছেন। এই মাছ ধরা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চলবে। মাছ ধরা শুরু করার পর থেকে সংসারে তাদের মাছ কেনার প্রয়োজন হয়না।
মাছ শিকারের নেতৃত্ব দানকারী উপজেলার কুটিচন্দ্রখানা চেয়ারম্যান পাড়ার আহম্মদ আলী বিহারী (৪৮) বলেন, আমরা বাপদাদার প্রচলিত মাছ শিকারি। শখেরবশে নদী-নালা খাল-বিলের পানি কমতে শুরু করলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাছ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।
তিনি বলেন, সবাইকে মাছ শিকারের জন্য আহবান করতে মহিষের শিংয়ের তৈরি শিংগায় ফুঁ দেওয়া হয়। যতদূর পর্যন্ত শিংগার ফুঁ যায় ততদূরের সৌখিন মাছ শিকারিরা ছুটে আসে মাছ ধরতে। আমরা সবাই এক জায়গায় সমবেত হয়ে মাছ ধরতে বের হই। প্রতি বর্ষা মৌসুমের শেষ সময় থেকে এখানকার নদী-নালা ও খাল-বিলের পানি কমার সাথেই মাছ ধরা শুরু করা হয় বলে জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ