আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আমেরিকা আর উত্তর কোরিয়ার মধ্যে হুমকি-পাল্টা হুমকি এখন নিত্যদিনের কাজের মতোই একটা ব্যাপার। দক্ষিণ এশিয়া সফরের শুরুতে জাপানে মাত্র বলে এসেছেন উত্তর কোরিয়াকে শিক্ষা দেবেন বলে। ট্রাম্পের সেই যুদ্ধংদেহী সুর হঠাৎ নরম হয়ে গেছে দক্ষিণ কোরিয়া এসে। দীর্ঘ এশিয়া সফরে এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘শত্রু’ উত্তর কোরিয়ার একেবারে ঘরের কাছে। রকেটম্যান উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকে কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতে আহ্বান জানালেন তিনি। কিমকে রকেটম্যান উপাধিটা ট্রাম্পেরই দেয়া।
আজ বুধবার উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত থেকে ৩৫ মাইল দূরে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বললেন, ‘গোটা মানবজাতির স্বার্থেই এবার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করা উচিত কিমের। ঈশ্বর করুন, আমাদের না যেন সত্যিই সেনা নামাতে হয়!’
কথায় কথায় যার হুমকি দেয়াই দস্তুর, তার মুখে এই নরম সুরে বিশ্বের স্বস্তি পাওয়ারই কথা। কিন্তু আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের একাংশ কিন্তু এখনই খুব বেশি আশাবাদী হতে রাজি নয়। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে তিনি যে আলোচনায় বসতে পারেন, ট্রাম্প নিজেও কাল পর্যন্ত তেমন কোনো ইঙ্গিত দেননি। বরং এশিয়া সফরের শুরুতে জাপান থেকে কিমকে কার্যত যুদ্ধের হুমকিই দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
উত্তর কোরিয়ার ঘরের প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় এসে ট্রাম্পের সুর এত নরম কেন! জোর জল্পনা- ‘রকেট ম্যান’ কিমের দোরগোড়ায় বলেই কি ট্রাম্প এতখানি সংযত!
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-র সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আলোচনায় সব মিটে গেলে তো ভালোই। আমার বিশ্বাস, পরিস্থিতির উন্নতির দিকে, আমরা ভালো ভাবেই এগোচ্ছি। এখন দেখা যাক এর পরে কী হয়!’
কিমকে ঠেকাতে এ দিন চিন ও রাশিয়াকে আরও চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প এদিন যেভাবে চিনের প্রশংসা করেছেন, তাতে অনেকেরই চোখ কপালে উঠেছে। ট্রাম্পের কথায়, ‘কিমকে সামলাতে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং বরাবরই আমাদের খুব সাহায্য করে এসেছেন।’চলতি এশিয়া সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরের গন্তব্য বেইজিং। সেই কারণেই ট্রাম্প এতখানি দরাজ বলে মনে করছেন অনেকে।
জাপান সফর সেরে আজ সকালে স্ত্রী মেলানিয়াকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন ট্রাম্প। সামরিক মর্যাদা দিয়ে তাদের স্বাগত জানায় সিউল। আর তার ঠিক পরপরই হেলিকপ্টারে করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড়ে যান ক্যাম্প হামফ্রেজ বিমানঘাঁটিতে। ওখানে দক্ষিণ কোরীয় সেনাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মহড়া করছে মার্কিন ও জাপানি সেনারা।
এই মুহূর্তে সব ঘাঁটি মিলিয়ে ৩০ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। তাই অনেকের দাবি, মুখে আলোচনার কথা বললেও বেপরোয়া কিমকে শিক্ষা দিতে ট্রাম্প আদতে সামরিক সংঘাতের দিকেই এগোচ্ছেন। এশিয়া সফর শুরুর আগেই এ জন্য প্রতিরক্ষা খাতে আরও ৪০০ কোটি ডলার বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব তিনি দিয়ে এসেছেন মার্কিন কংগ্রেসে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ