নিজস্ব প্রতিবেদক:
খুলনার বাজুয়া এসএন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতির হাতে লাঞ্ছিত হয়ে দাকোপ উপজেলার এক কলেজছাত্রী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত জয়ি মন্ডল (২০) বাজুয়া এলবিকে সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। সোমবার সকালে কলেজ হোস্টেল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
জয়ি দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা ইউনিয়নের উত্তর বানীশান্তা গ্রামের কুমারেশ মন্ডলের মেয়ে। আত্মহননকারী কলেজছাত্রীর পরিবার এ মৃত্যুর জন্য বাজুয়া এসএন কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি ইনজামামুল হক মির্জা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মৃধা সাইফুল হোসেন টুটুলকে দায়ী করছেন।
জয়ির চাচা সমরেশ মন্ডল বলেন, তার ভাতিজি জয়ি কলেজ হোস্টেলে থেকে বাজুয়া কলেজে পড়তো। বাজুয়া এসএন কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি ইনজামামুল হক মির্জা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মৃধা সাইফুল হোসেন টুটুল তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো।
তিনি জানান, গত রোববার বিকেলে ফিজিক্সের শিক্ষক অরিন্দম স্যারের কাছে পড়তে আসার পথে ইনজামামুল হক জয়ির সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এঘটনা সে তার বান্ধবীদের কাছে বলেছে। এছাড়াও ইনজামাম তার হাত ধরে ঘরে নিয়েও তাকে লাঞ্ছিত করে। এ কারণেই জয়ি আত্মহত্যা করেছে।
জয়ির চাচা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ নেতা ইনজামামুল ও সাইফুল এভাবে উত্ত্যক্ত না করলে তার ভাতিজির এভাবে আত্মহত্যা করতে হতো না। এসময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। আর ওরা খুব প্রভাবশালী। পত্রিকায় লিখে কি হবে? আমরা তো বিচার পাব না। উল্টো আরও হয়রানির শিকার হব।’
এ ব্যাপারে দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাবুদ্দীন চৌধুরী বলেন, সকাল ৯টার দিকে কলেজ হোস্টেলের কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় কলেজছাত্রী জয়ির লাশ দেখতে পাওয়া যায়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দাকোপ থানাকে অবহিত করলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। তিনি জানান, গত রোববার বিকেল ৪টার দিকে জয়িসহ তিন ছাত্রী কলেজ ক্যাম্পাসে একজন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যান। এসময় ছাত্রলীগ নেতা ইনজামামুল হক মির্জা তাদের ডাক দেয়। অন্য দু’জন ছাত্রী ইনজামামের কাছে না গেলেও জয়ি তার কাছে যান।
ওসি জানান, কথা বলার এক পর্যায়ে জয়ি ইনজামামকে চড় মেরে সেখান থেকে চলে আসেন। তবে কী বিষয় নিয়ে জয়ি তাকে চড় মারেন তা এখনো জানা যায়নি। তিনি বলেন, ইনজামামকে আটক করা গেলে জয়ির আত্মহত্যার কারণ জানা যেতে পারে। তাকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা ইনজামামুল ও সাইফুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ