নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘গণতন্ত্রের জন্য আমাদের সংগ্রাম চলছে, ভবিষ্যতেও এ সংগ্রাম চলবে। বিজয় আমাদের হবেই’ এমন দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা প্রতি বছর ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবার ক্ষমতাসীনরা আমাদের সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে।’
মঙ্গলবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ড্যাব আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস উপলক্ষে ড্যাব এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করে।
৪২ বছর আগে সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানের এক পর্যায়ে ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সৈনিক এবং সাধারণ জনগণকে নিয়ে বিপ্লব করার চেষ্টা করে জাসদ। আর সেনাবাহিনীর একাংশের হাতে বন্দী জিয়াউর রহমানকেও মুক্ত করে তারা। কিন্তু এই চেষ্টার নিয়ন্ত্রণ পরে জাসদের হাতছাড়া হয়ে যায় এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কাছাকাছি চলে আসেন জিয়াউর রহমান।
এই দিনটিকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে বিএনপি। দলটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে এই ছুটি বাতিল করা হয়। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দিনটিকে পালন করে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস হিসেবে।
আওয়ামী লীগ শাসনামলে গত কয়েক বছরে বিএনপিকে এই দিন সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পায়নি। চলতি বছরও দিনটির স্মরণে ৮ নভেম্বর বুধবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু একই সময়ে আরও একটি সংগঠন সেখানে সমাবেশ করতে চেয়েছে জানিয়ে কাউকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুসংহত করার জন্য প্রতি বছর আমরা ৭ নভেম্বর দিনটিকে স্মরণ করি। কিন্তু আজকের এই দিনে নতুন করে শপথ নিতে হবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার।’ সরকারকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে এই অপশক্তির পরাজয় হবে। সেই সঙ্গে অর্জিত হবে জনতার বিজয়।’
এরপর দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও সরকার তাদের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি করতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন ফখরুল। এসময় দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ পূর্বনির্ধারিত দিন থেকে একদিন পিছিয়ে রবিবার করার কথাও বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করব, সরকার সমাবেশ করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। বিএনপি প্রতিবছরই বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায়, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করে। কিন্তু সরকার এবার সিপিএ (কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন) সম্মেলনের অজুহাত দেখিয়ে আমাদের সেখানে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করতে দেয়নি। সরকার গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ও নাগরিক অধিকারে যেভাবে বাধা দিয়ে আসছে, এরই ধারাবাহিকতায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপিকে শ্রদ্ধা জানানো ও মিলাদ মাহফিল আয়োজন করতে দেয়নি বলে আমরা মনে করি।’
ড্যাবের কর্মসূচিতে সংগঠনের মহাসচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ড্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ