দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক:
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্যার ফজলে হাসান আবেদের পর এবার তৃতীয় বাঙালি হিসেবে ব্রিটেনের সর্বোচ্চ রাজকীয় নাইটহুড খেতাবে ভূষিত হলেন বিচারপতি আখলাক উর রহমান চৌধুরী। এবছরে মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রথম ব্রিটিশ বাঙালি হিসেবে ব্রিটেনে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। গত ২ অক্টোবর থেকে তার এই নিয়োগ কার্যকর হয়েছে। এরই মধ্যে পেয়ে গেলেন ব্রিটেনের সর্বোচ্চ রাজকীয় খেতাব নাইটহুড। এর আগে হাইকোর্টের ডেপুটি বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আখলাকুর রহমান চৌধুরী।
আখলাকুর রহমান চৌধুরী ১৯৯২ সালে ব্যারিস্টারি পাস করে আইন পেশায় যোগ দেন। এ পেশায় থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুইজন কুইনস কাউন্সেলের (কিউসি) মধ্যে তিনি একজন। অন্যজন হলেন- ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি। ‘কমার্শিয়াল, এমপ্লয়মেন্ট ও ইনফরমেশন ‘ল’ বিশেষজ্ঞ আখলাকুর রহমান চৌধুরী গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি থেকে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রিধারী। পরে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি পান। আইন পেশায় যোগ দেওয়ার পর তিনি দ্রুত উন্নতি করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে শীর্ষ পাঁচ ব্রিটিশ আইনজীবীর তালিকায় চলে আসেন। লর্ড আরভিন অব লেয়ার্গ এবং লর্ড জাস্টিস ইলিয়াসের সঙ্গে আপিল আদালতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। অ্যাটর্নি জেনারেলের ‘এ’ প্যানেলভুক্ত আইনজীবী হিসেবে আখলাকুর রহমান চৌধুরী কিউসি দীর্ঘদিন ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস, মিনিস্ট্রি অফ ডিফেন্স, এইচএমআরসি ও সরকারের অন্যান্য বিভাগে আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্রিটিশ তথ্য কমিশনারের কাউন্সেল হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তথ্য অধিকার ও তথ্য সংরক্ষণ আইন নিয়ে অনেক মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা আখলাকুর রহমান চৌধুরীকে ২০১৫ সালে কুইনস কাউন্সেল করে নেয়া হয়। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা স্বনামখ্যাত রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী মরহুম আজিজুর রহমান চৌধুরীর পুত্র আখলাকুর রহমান চৌধুরীর জন্ম হ্যাম্পশায়ারে। আখলাকুর রহমান চৌধুরীর পিতা মরহুম আজিজুর রহমান চৌধুরী ১৯৭১ সালে ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। তাদের আদি নিবাস বৃহত্তর সিলেটের করিমগঞ্জে (এখন ভারতের অংশ) ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর আজিজুর রহমান চৌধুরীর সপরিবার বাংলাদেশের জকিগঞ্জে চলে আসেন। আজিজুর রহমান চৌধুরী ১৯৬২ সালে ব্রিটেনে আগমন করেন। তার দুই পুত্র ও এক কন্যার মধ্যে আখলাকুর রহমান চৌধুরী বড়, তার সন্তানেরা সকলেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, একমাত্র কন্যা ব্রিটেনে এনএইচএসয়ে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন। অন্য পুত্র ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে আসীন রয়েছেন।