আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত ৬৫ বছরে মিয়ানমার বাহিনীর বর্বরতায় ১০ মিলিয়ন (এক কোটি) রোহিঙ্গা নিহত এবং ৩০ মিলিয়নের (৩ কোটি) মত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। গত ২৫ আগস্টে শুরু নৃশংসতার কারণে আরো প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। যারা এখনও বসতভিটা আকড়ে রয়েছে, তাদের ওপর চলছে মিয়ানমার বাহিনীর পাশবিকতা। ” এমন অবস্থার অবসানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করে নেদারল্যান্ডের হ্যাগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের ১৬ জন বিচারকের কাছে প্রেরিত পত্রের জবাব এসেছে।
৩০ অক্টোবর এই কোর্টের প্রসিকিউটর অফিসের তথ্য-উপাত্ত ইউনিটের প্রধান মার্ক পি ডিলন স্বাক্ষরিত এই প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘প্রাপ্ত ডক্যুমেন্ট/চিঠি (আবেদনপত্র) যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই অফিসের কম্যুনিকেশন রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের রোম সনদ অনুযায়ী যথাযথভাবে তা আমলে নেয়ার বিষয় বিবেচনা করা হবে। তবে এটি মনে রাখতে হবে যে, এই প্রাপ্তি স্বীকারের অর্থ এই নয় যে, আবেদন অনুযায়ী তদন্ত শুরু করা হয়েছে, কিংবা এই প্রসিকিউটর অফিস থেকে তদন্ত শুরু করা হবে। ’ আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যত শিগগিরই তা আমলে নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেই আপনাকে আমরা অবহিত করবো। তা বিস্তারিতভাবে জানাবো লিখিতাকারে। ’
গত ১৭ অক্টোবর এই আবেদন জানান নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত ‘সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশন’ নামক মানবাধিকার সংস্থার প্রেসিডেন্ট এবং চীফ কাউন্সিলর তারিক জামান। ‘মানবতার জন্য আমাদের চেতনাবোধকে জাগ্রত করলেই নিরাপদ-বিশ্ব সম্ভব’ স্লোগানে কর্মরত এই সংস্থার পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টকে দেয়া তথ্য-উপাত্তের কপি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধিকেও দেয়া হয়েছে বলে এই সংবাদদাতাকে জানান বাংলাদেশি-আমেরিকান তারিক জামান।
তারিক উল্লেখ করেন, গত ৬৫ বছর যাবৎ চলমান গণহত্যায় কত রোহিঙ্গার প্রাণ গেছে, সে হিসাব কী কখনও করা হয়েছে, বিচার দূরের কথা। এখন সময় এসেছে কড়ায়-গণ্ডায় মিয়ানমার বাহিনীর হিসাব কষার। তারিক অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ নীরব, কারণ আরাকান রাজ্য তেল এবং গ্যাসের খনিতে ভরপুর। চীন আর ভারত বিশ্বের অন্যান্য শক্তির সাথে মিলেমিশে বাংলার কিছু অংশ সহকারে আরাকান রাজ্যের খনিজ সম্পদ হজম করতে চায়। চীন আর ভারত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ১৪.১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
তারিক জামান মানবিক বিবেক সম্পন্ন প্রতিটি মানুষকে মিয়ানমারের পণ্য-সামগ্রী বর্জনের আহবান জানান। একইসাথে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে দায়েরকৃত এই মামলা পরিচালনায় সর্বাত্মক সহায়তার কথাও উল্লেখ করেছেন তারিক জামান। এর আগে নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী মোহাম্মদ কাইয়ুমের দায়েরকৃত পৃথক একটি অভিযোগপত্রও পেয়েছে এই কোর্ট। সেখানেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায় নিধনের ষড়যন্ত্রে লিপ্তদের বিচার চাওয়া হয়েছে।
উভয় আবেদনেই সসম্মানে রোহিঙ্গাদের বসতভিটায় ফিরে যাবার পরিবেশ তৈরির দাবিও জানানো হয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

