নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বিমানবন্দর থানাধীন কাওলার সিভিল এভিয়েশনের স্টাফ কোয়ার্টারে নিজ বাসায় জাহাঙ্গীর হোসেন হত্যা মামলায় স্ত্রী মুক্তা জাহান (৪২) ও তার পরকীয়া প্রেমিক জসিমের (২৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। বুধবার ঢাকার সাত নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সি রফিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দণ্ডিতদের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি জসিমের সহযোগী মাহবুবুর রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের পক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি ড. মো. মাহবুব আলম ভূইয়া মিলন। তারা জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। মামলার অভিযোগ যেভাবে তারা প্রমাণ করতে পেরেছেন তাতে তিন আসামির মৃত্যদণ্ডের রায় হওয়া উচিত ছিল। রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ঠিক করে আদালত। মামলাটির চার্জগঠনের পর আদালত বিভিন্ন সময় চার্জশিটের ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সাক্ষীর তালিকায় রয়েছেন নিহত জাহাঙ্গীরের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে এমি ও সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে মাশরাফি রাব্বানিও প্রধান আসামি মা মুক্তা জাহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে। ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর নিহতের কিশোরী মেয়ে এ্যামি জাহান (১৬) ও একমাত্র ছেলে মাশরাফি রাব্বানী (১২) তার মায়ের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেয়।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট বিমানবন্দর থানাধীন কাওলার সিভিল এভিয়েশনের স্টাফ কোয়ার্টারে নিজ বাসায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় জাহাঙ্গীরকে। দুই সন্তানকে প্রাইভেট পড়তে পাঠিয়ে পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। নিহত জাহাঙ্গীর পেশায় একজন ড্রাইভার ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের খালাতো ভাই মো. আব্দুল লতিফ বিমানবন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে কারও নাম ছিল না। তবে তদন্তে স্ত্রী মুক্তা জাহান, তার পরকীয়া প্রেমিক জসিম ও মাহবুবুর রহমান জড়িত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিমানবন্দর থানা পুলিশের এসআই আবু বকর সিদ্দিক তাদের গ্রেপ্তার করেন। পরবর্তী সময়ে আসামিদের মধ্যে মুক্তা জাহান হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মামলাটি তদন্তের পর ২০১৩ সালের ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন বিমানবন্দর থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ