২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৩৪

কাদেরের লেলিয়ে দেওয়া যুবলীগ-ছাত্রলীগই হামলা করেছে: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের লেলিয়ে দেওয়া যুবলীগ-ছাত্রলীগই হামলা করেছে। কিন্তু জনতার ঢলে ওবায়দুল কাদেরের লাঠি-পিস্তল বাহিনী টিকতে পারেনি।’ আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মানববন্ধনে রিজভী এ অভিযোগ করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফেনী হচ্ছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের একটি বড় ‘ফ্যাক্টরি’। অনেক হাজারীর জন্ম সেখানে। তারা নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে, তাদের প্রতিপক্ষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে হত্যা করে। ফেনী শহরে ঢোকার আগে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার দায়িত্ব তাদের ওপর দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি যে ডাকাতের মতো আক্রমণ করেছে। ডাকাত বলাতে রাগ করে আওয়ামী লীগ, তাদের বুদ্ধিজীবীরা। সন্ত্রাসী আর ডাকাতের মধ্যে পার্থক্য কী? সন্ত্রাসী বললে তাঁরা মাইন্ড করেন না, ডাকাত বললে একটু মাইন্ড করেন।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সব সময় খালেদা জিয়ার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন—গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। বিষয়টি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের এমনই এক রসিকরাজ। সকালে বলছেন যুবদল, ছাত্রদল নিজেরা গোলমাল পাকাচ্ছে। বিকেলে বলছেন খালেদা জিয়ার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, দেশে বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের ও সমাবেশের স্বাধীনতা নেই। কক্সবাজারমুখী লাখো মানুষের ঢলে আওয়ামী লীগ পাগল হয়ে গেছে—মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা কখন কী করছে, তারা নিজেরাই জানে না। আওয়ামী লীগের এই মিথ্যাচার, অপপ্রচার আর কাজে লাগবে না।’ আওয়ামী লীগের ‘সবচেয়ে বড় বন্ধু’ ভারতও তাদের সহযোগিতা করেনি অভিযোগ করে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘এখন কী হচ্ছে? ভারতের যে কয়জন রোহিঙ্গা, তাদেরও বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন আগে বেনাপোল দিয়ে ছয়জন রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। তাহলে আপনাদের সক্ষমতা কোথায়? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন মিয়ানমার থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসলেন?’

বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘বলছেন নভেম্বরে জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির কাজ শুরু হবে। নিজ দেশ থেকে উৎখাত হওয়া মানুষ মরছে, জ্বলছে; অথচ তাদের নভেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে ফেলে দেওয়া হলো। এ-ই হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রনীতি। মিয়ানমারের সঙ্গে কিছু করতে পারেন না। একটি প্রতিবাদও করতে পারেন না। বরং ভিক্ষুকের মতো চাল চাইতে গেছেন। কী নির্লজ্জ! গোটা জাতিকে অপমান করেছে আওয়ামী লীগ আর তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা।’ নিজ দেশে বিরোধী দলকে দমন করার জন্য সরকারের শক্তি প্রয়োগের কোনো কমতি নেই—মন্তব্য করে রিজভীর অভিযোগ, ‘মিছিল দেখলেই ধরো। প্রতিবাদ দেখলেই আটক করো। বেশি কথা বললে নিরুদ্দেশ করে দাও। গুম, অপহরণের সংস্কৃতি এটা আওয়ামী লীগের। যখন তারা দেখে জনতার চাপে কিছুই করা যাচ্ছে না, তখন তারা দোষ চাপাবে।’

রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়ার প্রতি এত হিংসা কেন? তাঁর জনপ্রিয়তায় এত ঈর্ষান্বিত কেন? ঈর্ষান্বিত এ কারণেই যে এত অত্যাচারের পরও খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তায় কোনো ধস নামাতে পারেনি। তাই প্রতিটি অত্যাচারে খালেদা জিয়া ও বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাঁর গাড়িবহরে হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আরও কলুষিত হয়েছে, ধিক্কৃত হয়েছে। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :অক্টোবর ৩০, ২০১৭ ২:২২ অপরাহ্ণ