২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:০৬

কক্সবাজারে আশ্রয়ে আছে ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা

দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞের হাত থেকে বাঁচতে গত দু’মাসে ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে কক্সবাজারে আশ্রয়ে থাকা নতুন ও পুরনো রোহিঙ্গার সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়েছে। সংস্থাটির অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে দু’লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয়ে ছিল। সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কবল থেকে প্রাণে বাঁচতে সর্বমোট ৬ লাখ ৪ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজারে প্রবেশ করেছে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক প্রয়োজন মেটাতে গত দুই মাসের বেশি সময় কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলোতে কাজ করছে আইওএমসহ বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা। আইওএম সহায় সম্বলহীন মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য ৮০ হাজার অস্থায়ী ঘর নির্মাণে বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেছে।

তবে এত বিপুল সংখ্যক মানুষের অস্থায়ী আশ্রয় নিশ্চিতে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এখনও আশ্রয় না পাওয়া রোহিঙ্গাদের অন্যত্র পাঠানো যায় কিনা তা নিয়েও আলোচনা চলছে।

এছাড়া, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মানবিক চাহিদা মিটছে কিনা তা তদারকির পাশাপাশি মিয়ানমারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অভিযোগ জানতে পরবর্তী করণীয় বিষয় নিয়েও সংস্থার কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে।

সংস্থার দাবি, এসব সরঞ্জাম দিয়ে প্রায় ৪ লাখ পরিবারের মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। ফলে সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত থেকে এসব শরণার্থী নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছে। তবে যাদের এখনও বসবাসের সুযোগ মেলেনি তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আইওএমসহ বিভিন্ন দেশি বিদেশি সংস্থা। তারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও কাজ করছে। পানি সরবরাহের পাশাপাশি সংস্থাটি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। সংস্থার  একটি দল কুতুপালং ক্যাম্পে নারী ও শিশুদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছে।

গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে বিদ্রোহীরা হামলা চালানোর পর জঙ্গি দমনের নামে রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনে নামে দেশটির সেনাবাহিনী। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের তথ্য মতে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের সবগুলো গ্রাম। হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে লাখ লাখ মানুষ। আইওএম’এর মতে ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে আসতে পারলেও এখনও মিয়ানমার সীমান্তে অতিক্রমের সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

সম্প্রতি জাতিসংঘ জানায়, বাংলাদেশের আশ্রয়ে থাকা প্রায় ১২ লাখ  সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য ৪৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা প্রয়োজন। জাতিসংঘের মতে, গত কয়েক দশকের মধ্যে এই অঞ্চলে এবারই প্রথম এত বিপুল সংখ্যক ‘শরণার্থীর’ প্রবেশ করেছে।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ২৯, ২০১৭ ১২:০৮ অপরাহ্ণ